চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার বিস্তারিত জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার জানার জন্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি স্টেপ বাই স্টেপ চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার জানানোর চেষ্টা করব।
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আশা করছি আপনি চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

মানবদেহে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রামনের কারনে চুলকানির সমস্যা হতে দেখা যায়। চুলকানি প্রতিরোধে বেশ কিছু ভেষজ উদ্ভিদ ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে কার্যকারী একটি ভেষজ উদ্ভিদ হলো নিম। প্রাচীনকাল থেকে চুলকানির ওষধ হিসেবে নিম গাছের পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিমপাতার মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের চুলকানির সমস্যাই খুব ভালো কাজ করে।

চুলকানিতে নিমপাতা লাগালে ঔষধ এর মত কাজ করে। যেভাবে চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার করা যেতে পারে তা হল:
  • নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই জল দিয়ে স্নান করলে খোসপাচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েকদিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়। পাতা ভেজে গুড়া করে সরিষার তেলের সাথে মিষিয়ে চুলকানিতে লাগালে যাদুর মতো কাজ হয়। নিম পাতার সাথে সামান্য কাঁচা হলুদ পিষে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে প্রলেপ আকারে ৭-১০ দিন ব্যবহার করলে খোস-পাঁচড়া ও পুরনো ক্ষতের উপশম হয়। নিম পাতা ঘিয়ে ভেজে সেই ঘি ক্ষতে লাগালে ক্ষত অতি সত্বর আরোগ্য হয়।
  • নিম পাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী। তাই ত্বকের সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। ব্রণের সংক্রমণ হলেই নিম পাতার গুড়া পেষ্টকরে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত। 
  • মাথার ত্বকে অনেকেরই চুলকানি ভাব হয়। নিম পাতার পেস্ট মাথায় নিয়মিত লাগালে এই চুলকানি কমে, চুল শক্ত হয়, চুলের শুষ্কতা কমে যায় এবং নতুন চুল গজায়।
  • শুধুমাত্র চুলের নয় ত্বকের চুলকানিতেও নিম পাতার পেষ্ট লাগালে উপকার পাওয়া যায়। যাদের চুলকানির ফলে রেশ সৃষ্টি হয় তারা কাঁচা নিমপাতা চুলকানির স্থানে ঘষতে পারেন।

এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

প্রাচীনকাল থেকেই নিম পাতার ব্যবহার অনেক। নিম পাতার গুণাগুণ বলে শেষ করার মতো না। বিশেষ করে এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার বহুল প্রচলিত। এলার্জির সমস্যা কম বেশি এখন সব মানুষেরই আছে। খুব বড় ধরনের রোগ না হলেও একে হেলাফেলায় ছেড়ে দেয়া যায় না। কারণ এটা কতটা ভয়ংকর সেটা যিনি ভুক্তভোগী শুধু তিনিই জানেন।


পছন্দের তালিকায় থাকা এমন অনেক খাবার আছে যা এলার্জি আক্রান্তরা খেতে পারেন না এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার ম্যাজিকের মত কাজ করে। তবে একটি উপায় মেনে চললে সহজেই আপনি এলার্জিকে দূর করতে পারবেন সারা জীবনের জন্য। চলুন জেনে নেই--

১ কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো নিম পাতা পাটায় পিষে গুঁড়ো করুন এবং তা ভালো করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি কৌটায় ভরে রাখুন। এক চা চামচের ৩ ভাগের ১ ভাগ নিমপাতার গুঁড়া এবং ১ চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ১ গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর চামচ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাতে শোয়ার আগে খেয়ে ফেলুন। ২১ দিন একটানা খেতে হবে। কার্যকারিতা শুরু হতে ১ মাস লেগে যেতে পারে। এরপর থেকে এলার্জির জন্য যা যা খেতে পারতেন না, যেমন- হাঁসের ডিম, বেগুন, গরুর গোশত, চিংড়ি, কচু, কচুশাক, গরুর দুধ, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য খাবার খান। আর সমস্যা হবে না।

নিম পাতার উপকারিতা

নিম পাতা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ ৷ নিমের ডাল, পাতা, রস সবই কাজে লাগে। প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে ঔষধি গাছ হিসেবে নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে। নিম পাতার উপকারিতা লিখে হয়তো শেষ করা যাবে না।


নিম পাতার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন। তাই এটা আমাদের শরীর গঠনে ভূমিকা রাখে। তাই আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা সব সময় নিম পাতা খেতে ভালোবাসে। তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট এ নিম পাতা খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হয়েছে।
নিম পাতার উপকারিতা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিম পাতার ব্যবহারঃ রক্তে শর্করার পরিমাণ হ্রাস করতে নিম পাতার ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যে কারণে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। গবেষণায় লক্ষ্য করা গিয়েছে, নিম হাইপোগ্লাইসেমিক প্রভাব প্রদর্শন করতে পারে। যার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের ব্যবহারের ফলে উপকার মেলে।

ব্রণ দূর করতেঃ নিমপাতার গুঁড়ো পানিতে মিশিয়ে মুখ ধুতে পারেন। এতে ব্রণ দূর হবে এবং ব্রণ থেকে তৈরি জ্বালাপোড়া ভাবও দূর হবে। এটা ব্রণ দূর করার একটি কার্যকর পদ্ধতি।

কৃমিনাশকঃ পেটে কৃমি হলে শিশুরা রোগা হয়ে যায়। পেটে বড় হয়। চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। বাচ্চাদের পেটের কৃমি নির্মূল করতে নিমের পাতার জুড়ি নেই।

অ্যালার্জি নিরাময়েঃ অ্যালার্জির সমস্যায় নিম পাতা ফুটিয়ে স্নান করুন। অ্যালার্জি যাবে ১০০ হাত দূরে। তাছাড়া কাঁচা হলুদ ও নিম পাতা একসাথে বেঁটে শরীরে লাগান। অ্যালার্জি কমবেই।

দাঁতের রোগ দূর করেঃ দাঁতের সুস্থতায় নিমের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করার প্রচলন রয়েছে সেই প্রাচীনকাল থেকেই। নিমের পাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমের ডাল দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজলে দাঁত হবে মজবুত, রক্ষা পাবেন দন্ত রোগ থেকেও।

প্রদাহ কমাতে সাহায্যঃ নিম পাতায় প্রদাহ বিরোধী গুণাবলী রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। বিশেষত, নিম পাতা প্রয়োগ করলে এলার্জির কারণে হওয়া ত্বকের প্রদাহ কমে যায়।

অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে নিম পাতার ব্যবহারঃ পাতার ব্যবহার হাঁপানির চিকিৎসায় সহায়তা করে। এছাড়াও এটি কফ, জ্বর এবং কাশি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রতিদিন কয়েক ফোঁটা নিম তেল পান করলে অ্যাজমা কিংবা হাঁপানির মতো সমস্যাগুলি থেকে দূরে থাকা যায়। মূলত হাঁপানি নিরাময়ে নিম তেল আয়ুর্বেদ শাস্ত্র থেকেই ব্যবহার শুরু হয়।


রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও নিম পাতার ভূমিকা রয়েছে। কারণ নিম পাতার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গুণ রয়েছে আর তাই নিম পাতার রস খেলে শরীরের পুষ্টি উপাদান গুলো পূরণ হয় এবং নিমপাতা রক্ত পরিষ্কার করে ও শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল বের করে দেয় আর শরীরে খারাপ কোলেস্ট্রল না থাকায় এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অত্যন্ত সাহায্য করে।

বাত ব্যথা নিরাময়েঃ নিমের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করলে তা বাতের ব্যথা অনেক উপকারী। আয়ুর্বেদ চিকিৎসা মতে বাতের ব্যথা কমাতে নিমপাতা, নিমের ফল ব্যবহার করা হতো। এখনো বাতের ব্যথার ওষুধ হিসেবে এসবের ব্যবহার রয়েছে।

চর্মরোগ নিরাময় করতেঃ নিম পাতা ব্রণ, ফোঁড়া, একজিমাসহ বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগের সমস্যায় বেশ উপকার বয়ে আনে। তবে যেকোনো স্থানে এই ধরনের সমস্যা হলে, সেখানে নিম পাতা বেঁটে লাগালে দ্রুত উপশম পাওয়া সম্ভব হয়।

কাশি ভালো করতেঃ যাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যায় কাশি হয়ে থাকে তারা ঘরোয়া উপায়ে কাশি ভালো করার জন্য নিম পাতার রস খেতে পারেন। নিম পাতার রসের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে কাশি ভালো হয়।

চুল পরিচর্যায় নিম পাতাঃ ত্বকের পাশাপাশি চুলের পরিচর্যাতেও নিম পাতার সমান গুরুত্ব রয়েছে। নিম পাতার রস নিয়মিত নিয়ম করে চুলে নিলে চুলের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়ে চুল হয় সুস্থ্য ও সুন্দর।নিমের মধ্যে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট থাকার কারণে নিম পাতার পেস্ট করে চুলে লাগালে এটি চুলের খুশকি দূর করে , চুলের অকাল পক্কতা রোধ করে, চুল পড়া রোধ করে ও চুলে উকুন হতে দেয় না। এছাড়াও নিম তেল ব্যবহার করলেও প্রচুর উপকার পাওয়া যায়।

পোকামাকড়ের কামড়ের ব্যথা দূর করেঃ পোকামাকড় কামড় দেওয়ার জায়গায় নিম গাছের মূলের ছাল অথবা পাতা বেঁটে লাগালে ব্যথা কমে আসবে। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে যে, পোকামাকড় বিষাক্ত না হয়। এমন হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম

নিম পাতা নানা উপায়ে খাওয়া যায়, তার মধ্যে একটি উপায় হলো নিম পাতা রস করে খাওয়া। নিম পাতার রসের অনেক কার্যকারি ক্ষমতা রয়েছে কিন্তু তা নিয়ম মেনে খেতে হবে। নিয়মিত নিয়ম মেনে নিম পাতার রস খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেই নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে-
  • নিমের পাতার রস করে এক চা-চামচ সকালে খান । যদি কৃমির সমস্যা থাকে তাহলে তা থেকে মুক্তি পাবেন । কৃমির সমস্যা না থাকলে খালি পেটে খাবেন না ।
  • যদি সরাসরি নিমের পাতার রস খেতে সমস্যা হয় তাহলে নিমের পাতা কে হালকা ফ্রাই করে নিয়ে খাবারের সঙ্গে খেতে পারেন অথবা কয়েকটা নিমের পাতা পানিতে দিয়ে সিদ্ধ করে ছেঁকে নিয়ে সে পানি পান করতে পারেন । এছাড়া সবজি রান্না করার সময় ২ থেকে ৩টা পাতা দিয়ে দিতে পারেন।
  • খালি পেটে নিম পাতার রস অল্প পরিমাণে খেলেও তা ভরা পেটে ফুল গ্লাস খাওয়ার মতো কাজ করে।খালি পেটে নিম পাতার রস খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনি প্রতিদিন সকালে 1-2 টি নিম পাতার রস খাবেন ,এর বেশি অবশ্যই নয়। আপনি এই নিয়মে দীর্ঘদিন একটানা খেলেও তাতে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না।
  • দ্রুত ফলাফল পাওয়ার জন্য অনেকে আবার খালি পেটে এক গ্লাস পরিমাণ নিম পাতা রস খেতে চান। এ বিষয়ে বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, সর্বোচ্চ সাত দিন পর্যন্ত একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ খালি পেটে এক গ্লাস পরিমাণ নিম পাতার রস খেতে পারেন। ৭ দিনের বেশি একটা না খালি পেটে নিমপাতার রস খাওয়া মোটেও উচিত নয় বরং একদিন পরপর সেবন করলে সেটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য আরো বেশি ভালো।
  • নিম পাতা তেতো হওয়ায় আপনি যদি শুধু নিম পাতা খেতে না পারেন, তাহলে নিম পাতা ব্লেন্ড করে মধু অথবা চিনির সাথে মিক্স করে খেতে পারেন। এ নিয়মে নিম পাতা খেলে জন্ডিস প্রতিরোধ হয়।
  • সম্মানিত পাঠক, অনেক সময় নিম পাতার রস সেবনে নানান পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যেমন- অনেকের ক্ষেত্রে এলার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে,মুখে ব্রনের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। নিম পাতার রস সেবনের ফলে যদি আপনারও এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে আপনি নিম পাতা রস খাওয়া বন্ধ করে দিন এবং একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিম পাতার রস সেবন করুন।

নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয়

প্রাচীনকাল থেকেই নিম পাতার গুড়া বা নিম পাউডার বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিম পাতার গুড়োয় বিদ্যমান প্রাকৃতিক উপাদান আমাদের শরীরে নানা উপাকারে আসে। নিম পাতার গুড়া খেলে কি হয় তা নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
  1. রক্তে অতিরিক্ত শর্করা থাকার কারনে আমাদের ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। প্রতিদিন নিম পাতার গুড়া খেলে আমাদের রক্তে থাকা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকে। ফলে আমাদের ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি মেলে। ডায়াবেটিস রোগীদের উচিত, তাদের খাদ্য তালিকায় নিম পাতার গুড়া রাখা।
  2. নিম পাতার গুড়া খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে ফ্রি র‍্যাডিক্যালস দূর করে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে।
  3. অনেকে তাদের শরীরে দুর্গন্ধের কারণে মানুষের সামনে যেতে লজ্জায় পড়ে। গোসলের পানির সাথে তারা নিম পাতা বা নিম পাতার গুড়া মিশিয়ে গোসল করলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এখন বাজারে নিম সাবানও পাওয়া গোসলের সময় নিম সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এ সাবান কতটা কার্যকরি এটা হলফ করে বলা যাবে না।
  4. পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে নিম পাতার গুড়া খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই ও আমাদের শরীরের সুস্বাস্থ্য গঠনে বিশেষভাবে উপযোগী।
  5. তবে নিম পাতা অবশ্যই পরিণত পরিমাণে খেতে হবে কারণ কোন কিছুই অতিরিক্ত পরিমাণে ঠিক নয়।

নিম পাতা মুখে দিলে কি হয়

অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় নিমপাতা ত্বকের অনেকগুলো সমস্যা দূর করে। ব্রণ, ব্ল্যাকহেডসের মতো ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে এটি বেশ কার্যকরী। সেইসঙ্গে পরিষ্কার করে ত্বকের অতিরিক্ত তেল। লোমকূপে লুকিয়ে থাকা ময়লা পরিষ্কার করতেও সাহায্য করে এই উপকারী পাতা। নিয়মিত নিম পাতার সাথে কাঁচা হলুদ পেস্ট করে লাগালে

ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি ও স্কিনটোন ঠিক হয়। তবে হলুদ ব্যবহার করলে রোদ এড়িয়ে চলাই ভালো। নিম পাতার চেয়ে হলুদের পরিমাণ কিন্তু কম হবে! নিম তেলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এর পাশাপাশি নিমে থাকা ওলেইস, প্লামিটিক এবং লিনোলেইস অ্যাসিডের মতো পদার্থ, যা ত্বকের যত্নে অত্যন্ত উপকারী।


এ ছাড়া এর অ্যান্টি-অনফ্লেমেটোরি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল পদার্থ ত্বককে অ্যালার্জি এবং র‍্যাশসহ অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্ত রাখে। নিমপাতা ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের আক্রমণ থেকেও ত্বক সুরক্ষিত রাখে। ব্রণের সমস্যা থাকলে নিমপাতার পেস্ট লাগালে উপকার পাওয়া যাবে।

ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার

ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করার কাজে নিমপাতা একাই একশো! ব্রণের দাগ থেকে শুরু করে চুলকানি- ত্বকের নানা সমস্যা দূর করতে এটি বেশ কার্যকরী। চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রণ দূর করতে নিমপাতার ব্যবহার-

নিম ও অ্যালোভেরা প্যাক-- ত্বকের যত্নের জন্য খুবই উপকারি একটি উপাদান অ্যালোভেরা। আর নিম ও অ্যালোভেরা যখন জুটি বাঁধে তখন উজ্জ্বলতা বাড়ে অনেকখানি। ত্বক থেকে দাগছোপ দূর করতে নিম পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিন। এবার এই গুঁড়ার সঙ্গে মেশান অ্যালোভেরা জেল। মুখে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। এরপর মুখ ধুয়ে সামান্য লেবু আর মধু মিশিয়ে মুখে মাখুন। পরে ভালো করে ধুয়ে নিন। কয়েকদিন ব্যবহারেই বুঝতে পারবেন এর কার্যকারিতা।

হলুদ ও নিম পাতার প্যাক-- হলুদ ও নিমপাতা একসঙ্গে ব্যবহারের ফলেও ত্বকে ব্রণ দূর হয়। হলুদ ও নিমপাতা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে যা আমাদের ত্বককে গভীরভাবে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। ফলে তোকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বন্ধ হয়ে যায় এবং ব্রণের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

নিম ও শসার ফেসপ্যাক-- নিম ও শসার এই ফেসপ্যাকও ব্রণ, পিম্পল, জ্বালাপোড়া কমাতে খুব উপকারী। শসা পেস্ট করে নিন। এর সঙ্গে ১ চা চামচ নিম পাতা গুঁড়ো এবং ১ চা চামচ আরগান অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।

নিম ও চন্দনের ফেসপ্যাক-- নিম ও চন্দন, উভয় উপাদানই ত্বকে পুষ্টি জোগায়। ব্রণ, র‍্যাশ এবং জ্বালা নিরাময়ে সাহায্য করে। ২ টেবিল চামচ নিম পাউডারের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ চন্দন পাউডার, ১ টেবিল চামচ গোলাপ জল এবং পরিমাণমতো জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন এই ফেসপ্যাক। তারপর ঠান্ডা জলে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলুন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেল থেকে চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানালাম। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমরা এই ধরনের মূল্যবান তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট প্রতিনিয়ত আপনাদের জন্য শেয়ার করে থাকি। প্রতিদিন পোস্ট করতে আমাদের পেজ ফলো করুন এবং সবসময় আমাদের সাথে থাকুন।

সর্বাধিক জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

নিম পাতা দিয়ে গোসল করলে কি হয়?
উত্তরঃ নিম পাতা সেদ্ধ করে সে পানিতে গোসল করলে ত্বকে নানা ধরনের খোসপাঁচড়া,ঘামের গন্ধ, এলার্জি নিরাময় হয়। নিমপাতায় আছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান। এই পানিতে গোসল করার ফলে যেকোনো সংক্রামক ব্যাধি দূর হবে।

মুখে নিম পাতা দিলে কি হয়?
উত্তরঃ মুখে নিমপাতা দিলে ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, ত্বকের ফোলা ভাব, ত্বকের এলার্জি জনিত সমস্যা দূর হয়।

নিম পাতা বাটা চুলে দিলে কি হয়?
উত্তরঃ নিম পাতা বাটা তুলে দিলে চুলের খুশকি দূর হয়, চুল প্রাণবন্ত হয়, চুলের আগা ফাটা বন্ধ হয় এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Umme Haney'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url