পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় জেনে নিন
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়গুলো জানা থাকলে প্রাথমিক অবস্থায় রোগটি থেকে
নিরাময় পাওয়া যায়। পায়ুপথের স্বাস্থ্যসমস্যা গুলোর মধ্য পাইলস অন্যতম একটি
সাধারণ সমস্যা। পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে হলে এই
আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন পাইলস হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না, পাইলস হলে কি কি
সমস্যা হয়, পাইলস এর লক্ষণ ও প্রতিকার, পাইলস অপারেশন খরচ কত, পাইলস হলে কি মানুষ মারা যায় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে।
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়
অর্শ্ব, পাইলস, গেজ, এনাল ফিসার এসব হচ্ছে মলদ্বারের রোগ। জীবনযাপনে অনিয়ম করার
কারণেই প্রধানত এই রোগ হয়। আমি আপনাদের পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির কিছু সহজ
পদ্ধতি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আপনারা সেগুলি অভ্যাস করলে অবশ্যই আপনারা পাইলস
থেকে চিরতরের মুক্তি পাবেন।
আরো পড়ুনঃ ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা
বাড়িতে চিকিৎসার মাধ্যমে পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া যায়, তবে তীব্রতার উপর
ভিত্তি করে কখনও কখনও চিকিৎসা পদ্ধতির প্রয়োজন হয়। বেশি ফাইবার খাওয়া আপনার
পাইলস প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। চলুন পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়
বিশদভাবে জেনে নেই।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: প্রতিদিনি শাক সবজি, ফলমূল, মটরশুটি ও ডাল ইত্যাদি
খাবার খাওয়া। ফাইবারযুক্ত খাবার খেলে পায়খানা স্বাভাবিক থাকে এবং পাইলস থেকে
মুক্তি পাওয়া যায়।
ইসবগুলের ভুষি: পাইলস রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা ইসুবগুলের ভুষি বেশ কার্যকর।
এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সক্ষম। এতে থাকা অদ্রবনীয় ফাইবার পাইলস রোগীদের
পায়খানা নরম করে দেয় যার ফলে ধীরে ধীরে পাইলস ভালো হয়ে যায়। মাত্রা অতিরিক্ত
ইসবগুলের ভুষি খাবেন না এর ফলে পেটে ব্যথা ও গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
পানি পান বৃদ্ধি করুন: প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা পাইলসের
চিকিৎসায় বেশ জরুরী। এখানে খেয়াল রাখতে হবে পানি যেন জীবাণুমুক্ত ও বিশুদ্ধ
পানি হয়। কোন প্রকার কোমল পানীয়, চা, কফি এবং অ্যালকোহল ইত্যাদি জিনিস পান করা
থেকে দূরে থাকুন।
ওটস রাখুন খাবারের তালিকায়: ওটস একটি উপকারী খাবারের নাম। এটি ডায়াবেটিস
রোগীদের জন্য ভীষণ উপকারী। সেইসঙ্গে এটি পাইলসের রোগীদের ক্ষেত্রেও সহায়ক। ওটসে
থাকে প্রচুর ফাইবার। তাই নিয়মিত ওটস খেলে হজম ও মলত্যাগে সমস্যা হয় না। ফলে পাইলস
দূর করা সহজ হয়। তাই পাইলসের সমস্যা থাকলে নিয়মিত ওটস খান।
দেশি ঘি ও হলুদ একটি প্রতিষেধক: দেশি ঘি তার গুণের জন্য সুপরিচিত।
নিয়মিত দেশি ঘি সেবন করলে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পাইলসের সমস্যা
থেকে মুক্তি পেতে দেশি ঘিতে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিয়মিত
পাইলসের জায়গায় লাগালে কয়েক দিনের মধ্যেই পাইলসের সমস্যা চলে যাবে।
অ্যালোভেরা: অর্শ্বরোগের চিকিৎসার জন্য অ্যালোভেরা হল প্রকৃতির সেরা
উপাদান । অ্যালোভেরার রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা এবং থেরাপিউটিক বৈশিষ্ট্য
অর্শ্বরোগের জ্বালা কমাতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরা উভয় অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত
উভয় অর্শ্বরোগের জন্যই ব্যবহার করা যেতে পারে। বহিরাগত অর্শ্বরোগ চিকিৎসার জন্য,
আপনার মলদ্বার উপর অ্যালোভেরা জেল একটু একটু করে প্রয়োগ করুন এবং ম্যাসাজ করুন।
অভ্যন্তরীণ অর্শ্বরোগের চিকিৎসার জন্য অ্যালো ভেরার পাতা কেটে নিন । এই বার একটি
পাত্রে রেখে ফ্রিজে রেখে দিন। ব্যথা, পোড়া এবং চুলকানির ব্যথা এবং জ্বালা কমাতে,
প্রভাবিত জায়গার উপর শীতল অ্যালোভেরা প্রয়োগ করুন।
আইস প্যাক ব্যবহার করুন: মলদ্বারের ব্যথা কমানোর জন্য আইস প্যাক ব্যবহার
করতে পারেন। বরফ ব্যথা কমানোর পাশাপাশি রক্ত চলাচল সচল রাখে। মলদ্বারে ব্যথার
স্থানে বরফের টুকরো কাপড়ে পেঁচিয়ে ১০ মিনিট লাগান। এভাবে দিনে কয়েকবার করলে ব্যথা
কমে যাবে।
হলুদ: হলুদ পাইলস বা অর্শ সমস্যা সমাধানে অনেকটা কাজে লাগে। এজন্য
আপনাকে কি করতে হবে কাঁচা হলুদ পানিতে দিয়ে ভালো করে পানিকে ফোটাতে হবে। আরে
ফোটানো পানি আপনাকে নিয়মিত পান করতে হবে। আপনি যদি এই ফোটানো হলুদ পানি নিয়মিত
পান করেন তাহলে পাইলসের সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাবেন।
লেবু ও আদার রস: পাইলস এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো ডিহাইড্রেশন। আপনি যদি
আদা ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে তার মধ্যে এক চামচ মধু দিয়ে দিনে দুবার এই
মিশ্রণটি পান করেন তাহলে আপনার পাইলস এর ক্ষেত্রে অনেক উপকার হবে। কারণ এই শরবত
শরীরকে হাইড্রেট করতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে সাথে পাইলসের সমস্যার সমাধান করে।
জলপাইয়ের তেল: জলপাইয়ের তেলের মধ্যে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য আছে যা প্রধানত বহিরাগত অর্শ্বরোগ চিকিৎসার জন্য
ব্যবহার করা হয়। এটি রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যা ব্যথা
কমাতে সাহায্য করে এবং পায়ুছিদ্রের মধ্যে রক্তনালীর আকার হ্রাস করতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই তেল শরীরে প্রদাহ দ্রুত কমায়। অর্শরোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রেও
এটি খুবই কার্যকরী।
পাইলস হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না
মানুষের ব্যস্ত জীবনে দেখা দিয়েছে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন। এ জন্য বিভিন্ন রোগেও
মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্তমান সময়ে অনেকে পাইলস রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর
প্রধান কারণ হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস ও অনিয়মিত জীবনযাত্রা। বিশেষজ্ঞদের মতে,
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কিছু খাবার
রয়েছে, যা খেলে বিপদ বাড়তে পারে। আসুন জেনে নিই যেসব খাবার খাবেন না-
মসলাযুক্ত খাবার:
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, পাইলসে আক্রান্ত হলে মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়।
অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার হজম ক্ষমতাকে দুর্বল করে পাইলসের ব্যথাও বাড়ায়।
ভাজা খাবার:
অতিরিক্ত ভাজাভুজি, জাংক ফুড এবং বেশি তেল আছে, এমন খাবার একেবারে খাবেন না। এতে
শরীরে পানির অভাব হয়। আর মলও শক্ত হয়ে যেতে পারে। তাতে পাইলসের সমস্যা মারাত্মক
আকার নিতে পারে। এই ধরনের খাবার যত কম খাওয়া যায়, ততই ভালো।
দুগ্ধজাত খাবার:
পাইলস হলে দুধজাতীয় খাবার, যেমন- পনির, দই বা অন্য কোনো দুগ্ধজাত পণ্য এড়িয়ে চলতে
হবে। এ খাবারটি পাইলস রোগীদের যন্ত্রণা দেয় এবং গ্যাসের সমস্যা বৃদ্ধি করে। এ
ছাড়া দুগ্ধজাত খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে, যা সমস্যা
গুরুতর করে।
গরুর মাংস:
পাইলস হলে রেড মিট জাতীয় মাংস একেবারে খাওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে গরুর মাংস। এটি
খেলেও মল মারাত্মক শক্ত হয়ে যেতে পারে। তাতে পাইলসের সমস্যা বাড়ে। এক্ষেত্রে
হোয়াইট মিট বা মুরগির মাংস খাওয়া যেতে পারে। তাও পরিমিত মাত্রায়।
অতিরিক্ত লবণ:
লবণ দেওয়া খাবার স্বাদে হয় অনন্য। তাই মানুষ এই খাবার খেতে ভালোবাসেন। এবার দেখা
গিয়েছে, অতিরিক্ত নুন যুক্ত খাবার খেলেও দেখা দিতে পারে পাইলসের সমস্যা। তাই আপনি
অবশ্যই এই বিষয়টি মাথায় রাখুন। আর নুনযুক্ত খাবার কম খান।
অ্যালকোহল:
পাইলস বা অর্শ্বরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই অ্যালকোহল সেবন কমিয়ে আনতে হবে।
অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় মলকে শক্ত এবং শুষ্ক করে তোলে, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।
এটা পাইলস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক।
পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয়
পাইলস খুবই পরিচিত একটি রোগ। এতে মলদ্বারের ভেতরের শিরা ফুলে ওঠে। ফলে দেখা দেয়
মল ত্যাগের সময় প্রদাহ ও রক্তপাত। কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
পাইলস হলে কি কি সমস্যা হয় তা জেনে নিন-
রক্তস্রাব: পাইলসের কারণে ক্ষুদ্র রক্তদ্রাবণ হতে পারে যা ফিসুর বা
রক্তবাহী পাইলসের কারণে হতে পারে।
স্রাবণ এবং ব্যথা: পাইলস থাকলে স্রাবণ হতে পারে এবং এর সাথে সাথে ব্যথা
অনুভব করা হতে পারে।
অতিরিক্ত জ্বালানি এবং অবস্থান: কিছু মানুষের পাইলসের কারণে অতিরিক্ত
জ্বালানি অনুভব করা হতে পারে এবং অবস্থানের সময় অস্বস্তি অনুভব করা যেতে পারে।
পরিচ্ছেদ রোগ: পাইলসের কারণে মানুষের পরিচ্ছেদের সমস্যা হতে পারে, যা
অতিরিক্ত স্রাবণ, জ্বালানি এবং ব্যথার কারণে হতে পারে।
এই সমস্যাগুলি পাইলসের সাথে সম্পর্কিত সাধারণ সমস্যার কিছু উদাহরণ, তবে সতর্কতা
মূলক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি পাইলসের সমস্যার সহিত
দীর্ঘদিন অভিজ্ঞতা অনুভব করেন বা সাধারণ সমস্যার বাইরে কিছু অস্বাভাবিক লক্ষণ
অনুভব করছেন, তাহলে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
পাইলস এর লক্ষণ ও প্রতিকার
পাইলস একটি অতি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি অর্শ রোগ নামেও পরিচিত।
বৃহদান্ত্রের শেষাংশে রেকটামের ভেতরে ও বাইরে থাকা কুশনের মতো একটি রক্তশিরার
জালিকা থাকে, যা প্রয়োজন সাপেক্ষে সংকুচিত ও প্রসারিত হয় যা আমরা পাইলস নামে জেনে
থাকি। কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো দেখে বুঝা যায় যে একজন মানুষ পাইলসে আক্রান্ত। নিচে
লক্ষণগুলো তুলে ধরা হলো-
পাইলস এর লক্ষণ--
পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া
- মলত্যাগের সময় টয়লেট পেপারে লাল রক্তের দাগ দেখা যেতে পারে।
- মলের সাথে উজ্জ্বল লাল রক্ত মিশে যেতে পারে।
- কিছু ক্ষেত্রে, তীব্র রক্তপাত হতে পারে।
পায়ুপথের মুখের অংশগুলো বেরিয়ে আসা
- মলত্যাগের সময় মলদ্বারের ভেতরের অংশ গুলো বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে।
- এগুলো সাধারণত নরম গোটার মতো দেখায়।
- মলত্যাগের পর, এগুলো নিজে নিজেই ভেতরে চলে যেতে পারে।
- তবে, কিছু ক্ষেত্রে, এগুলো বেরিয়ে থাকতে পারে এবং আঙ্গুল দিয়ে ঠেলে ভেতরে ঢোকানোর প্রয়োজন হতে পারে।
পায়খানার রাস্তায় ব্যথা হওয়া
- মলত্যাগের সময় তীব্র ব্যথা হতে পারে।
- মলত্যাগের পরও ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
- ব্যথা তীব্র হলে, বসতে বা হাঁটতে অসুবিধা হতে পারে।
পায়খানার রাস্তায় চুলকানি
- মলদ্বার ও পায়ুপথে চুলকানি হতে পারে।
- চুলকানি তীব্র হলে, জ্বালা ও অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে।
- চুলকানির কারণে, মলদ্বার ও পায়ুপথে ঘষা লেগে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
তো স্বাভাবিক ভাবে যখন আপনার পাইলস হবে তখন আপনার কি কি লক্ষন দেখা দিবে সেগুলো
উপরে শেয়ার করা হয়েছে। আর যদি আপনিও আপনার মধ্যে এমন কোনো লক্ষন দেখেন তাহলে
আপনাকে অতি দ্রুত অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে। যেন সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা
দিয়ে আপনার অর্শ্বরোগ দুর করা যায়।
পাইলস এর প্রতিকার--
পাইলসের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনের পাশাপাশি বদলে
ফেলুন খাদ্যাভ্যাস। যে সব খাবার এড়িয়ে চলবেন-
- চা কফি বা ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন। গ্রীন টি খাওয়া যেতে পারে স্বল্প মাত্রায়।
- অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
- গরুর মাংস, বা যে কোন রেড মিট খুব কম পরিমানে গ্রহণ করুন।
- প্রক্রিয়াজাত দানা শস্য এড়িয়ে চলুন
- দুধ,চিজ, পানির এবং দুগ্ধজাত খাবারের পরিমান কমিয়ে দিন।
- অতিরিক্ত অদ্রবণীয় আঁশ জাতীয় শাক যেমন লাউশাক, কুমড়া শাক এবং মল শক্ত করে এমন সবজি যেমন কাঁচা কলা এসব খাবার এড়িয়ে চলুন।
- বাইরের প্রিজারভেটিব সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ বর্জন করুন।
- ধুমপান,মদ্যপান বন্ধ করুন।
আমাদের সচেতনতা,সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত পরিমিত পানি পান,শারীরিক শ্রম এই সব
কিছুর সমন্বয় সাধনের ফলে খুব সহজেই এই রোগ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
পাইলস অপারেশন খরচ কত
পাইলসের অবস্থা খারাপ হলে, অর্থাৎ সমস্ত নিয়ম মেনে ও ওষুধ খাওয়া সত্ত্বেও যদি
পাইলস নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে
বাংলাদেশে ৩ ধরণের অপারেশন প্রচলিচ আছে।
হেমোরয়েডেকটোমি: এই অপারেশনে রোগীর অজ্ঞান অবস্থায় সম্পূর্ণ পাইলস এর
গোটাগুলো কেটে অপসারণ করা হয়। এতে রোগীর ক্ষত পুরোপুরি শুকাতে প্রায় ১ মাস সময়
লাগবে।
স্ট্যাপল্ড হেমোরয়েডোপেক্সি: এই ক্ষেত্রে, লম্বা হয়ে বেড়িয়ে আসা পাইলস এর
গোটাগুলো অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মলদ্বারে পুনরায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
হেমররহইডাল আর্টারি লিগটিও: এই পদ্ধতিতে পাইলসের সাথে সংযুক্ত সমস্ত
রক্তনালী কেটে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে পাইলস শুকিয়ে যায়।
উপরে বর্ণিত পাইলস অপারেশনের খরচ অবস্থা এবং সংস্থার উপর নির্ভর করে ১০,০০০ থেকে
৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
এছাড়াও আরেকটি পদ্ধতি আজকাল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পদ্ধতিটিকে লেজার
হেমোরয়েডস ট্রিটমেন্ট বলা হয়, যাকে সার্জারি ছাড়া পাইলসের চিকিৎসা বলা যেতে
পারে। এর জনপ্রিয়তার প্রধান কারণ হলো লেজার চিকিৎসায় কোনো অস্ত্রোপচার বা
রক্তপাত হয় না। রোগী কোনো ব্যথা অনুভব করে না। খুব দ্রুত রোগী সুস্থ হয়ে
স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে।
পাইলস হলে কি মানুষ মারা যায়
আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করেছেন যে পাইলস হলে কি মানুষ মারা যায়? উত্তর হলো “না”
পাইলস হলে মানুষ মারা যায় না। তবে আপনি যদি পাইলস এর অবহেলা করেন। তাহলে আপনার
পাইলস প্রথমে পর্যায়ে থেকে চতুর্থ পর্যায়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার সেখান
থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর ক্যান্সার হলে বুঝতেই পারছেন কি হতে
পারে।
আরো পড়ুনঃ শরীর সুস্থ রাখার খাবার তালিকা
তবে সম্ভবতই পাইলস হলে মানুষ মারা যায় না। সঠিক সময়ের মতো এর সঠিক চিকিৎসা করলে
পাইলস থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। আর আপনার যদি চতুর্থ পাইলস পর্যায়ে
হয়ে থাকে তাহলেও আপনি এর চিকিৎসা করে এটি থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। বর্তমানে
পাইলসের দুইভাবে সার্জারি করা হয়। লেজার সার্জারি ও নরমাল সার্জারি।
এক্ষেত্রে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো লেজার সার্জারি। আর আপনার যদি পাইলস
চতুর্থ পর্যায়ে যায় তাহলে লেজার সার্জারির মাধ্যমে মুক্তি পেতে পারবেন। আর যদি
অবহেলা করে রেখে দেন তাহলে এটি থেকে ক্যান্সার ও তারপর মৃত্যু হতে পারে। আশা করছি
বুঝতে পেরেছেন।
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায় সম্পর্কে
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। পাইলস হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে চিকিৎসা করানো উচিত।
পাইলস যদি ব্যথা বা অস্বস্তি সৃষ্টি করে, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সহজেই
তা উপশম করা যাবে। সুস্থ নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন ও সঠিক খাদ্যভাসই হচ্ছে আপনার
পাইলস থেকে চিরতরে মুক্তির উপায়।
Umme Haney'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url