শরীর সুস্থ রাখার খাবার তালিকা

শরীর সুস্থ রাখার খাবার তালিকা সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। সুস্থ সুখী ও সরল জীবনের জন্য প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা। শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত সঠিক পরিমাণে সঠিক খাবারটি খেতে হবে। সুস্থ থাকার জন্য দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা অনুযায়ী খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী।শরীর সুস্থ রাখার খাবার তালিকা

শারীরিক সুস্থতা অর্জনের জন্য নিয়ন্ত্রান্ত্রিক জীবন যাপন ও সঠিক খাদ্য ব্যবস্থা অপরিহার্য। আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে শরীর সুস্থ রাখার খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শরীর সুস্থ রাখার খাবার তালিকা গুলো জেনে নেয়া যাক

ভূমিকা

খাদ্য মানুষের জীবনের জন্য অন্যতম একটি প্রয়োজনীয় উপাদান যা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয়। দৈন্দন জীবনে যারা সুস্থ থাকতে চান তাদেরকে অবশ্যই বিভিন্ন খাবারের তালিকা অনুসরণ করতে হবে এবং সুস্থ খাবার খেয়ে সুস্থ থাকতে হবে সুস্থ থাকার প্রধান নিয়ামক সুষম খাবার


সুষম খাদ্যের উপাদান ৬ টি। এগুলো হলোঃ শর্করা বা শ্বেতসার, আমিষ বা প্রোটিন, ভিটামিন বা খাদ্য প্রাণ, খনিজ লবণ, ফ্যাট বা চর্বি, বা পানি। দেহের বৃদ্ধি, ক্ষয় পূরণ, তাপ উৎপাদন করার জন্য ও নিজেদের কর্মক্ষম রাখতে সুষম খাবারের বিকল্প নেই। নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীর সুস্থ রাখার বিভিন্ন পরামর্শ নিয়ে আমাদের এই আয়োজন।

সুস্থ থাকার দৈনিন্দন রুটিন

বিশৃংখল জীবন যাপন রোগবালয় ডেকে আনে। কাজেই রোজগার রুটিন হওয়া চাই স্বাস্থ্যকর। আরামদায়ক জীবনের প্রয়োজনে শরীর সুস্থ রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর্টিকেলে আমরা সুস্থ জীবনের জন্য শরীর সুস্থ রাখার উপায় সম্পর্কে চর্চা করব।

সব সময় ভালো চিন্তা করুন

জীবনে যখন যাই করেন না কেন সব সময় ভালো চিন্তা করুন। ভালো চিন্তা আমাদের দেহ মনকে সুস্থ রাখে। প্রতিদিন শুরু করুন ভালো চিন্তা দিয়ে, কোন খারাপ কিছু থেকেও ভালো আশা করুন। দেখবেন দেহ ও মন উভয়ে আপনাকে সুস্থ রাখবে।

প্রতিদিন সঠিক খাবার গ্রহণ করুন

জন্মের পর মানুষের প্রথম প্রয়োজন খাদ্য। এই এই খাদ্যই পুষ্টির বাহক। শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন সঠিক খাবার গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফল ও শাকসবজি থাকা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ফল ও শাকসবজিতে ক্যালরি ও চর্বি কম থাকে।

সকালে নাস্তা শুরু করুন স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে যা আপনাকে সারাদিন সুস্থ রাখলে সাহায্য করে। পুষ্টিকর খাবার আমাদের শরীরের ঘাটতি মেটায়। পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে উচ্চ ফাইবার , কম ফ্যাট এবং উদ্ভিদ জাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ টি ফল খেতে হবে।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন

নিয়মিত ব্যায়াম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আজ থেকে ২ হাজার ৫শ বছর আগে আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রের জনক হিপোক্রেটিস বলে গেছেন মানুষের জন্য সেরা ওষুধ হলো হাটা। হাটা খুবই ভালো ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম করলে সুস্থ থাকা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা সবসময় পরামর্শ দেয় নিয়মিত ব্যায়াম করার জন্য। ব্যায়ামের ফলে শারীরিক দুর্বলতা হ্রাস পায় এবং ব্যায়াম ভালো ঘুম হতে সহায়তা করে।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন

পানির অপর নাম জীবন। সুস্থ থাকতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন। সঠিক হাইড্রেশন শরীরের প্রয়োজনীয় সরবরাহ করে। আপনি যেখানে যান না কেন পানির বোতল নিয়ে যেতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন সুস্থতার জন্য পানির বিকল্প নাই।

পর্যাপ্ত ঘুম
সুস্থ সবল থাকতে পর্যাপ্ত ঘুমের কোন বিকল্প নেই। ঘুম শরীরকে চাঙ্গা করে পরবর্তী দিনের কাজের জন্য আমাদের তৈরি করে। সুস্বাস্থ্যের জন্য একজন ব্যক্তি সাধারণত ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। আমাদের মস্তিষ্ক ঠিকভাবে কাজ করতে হলে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন।

সঠিক ওজন বজায় রাখুন

একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুখী জীবন যাপনের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুস্থ জীবন যাপনের জন্য প্রত্যেকের একটি নির্দিষ্ট শারীরিক ওজন বজায় রাখা দরকার। শরীর ও মন ভালো রাখতে নিজের ওজন ঠিক আছে কিনা সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

দৈনিক পুষ্টিকর খাবারের তালিকা

দৈনিন্দন জীবনে আমরা অনেক ধরনের খাবার খেয়ে থাকি। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ খেতে ভালোবাসে। কিন্তু অনেকে সুস্বাদু খাবার সামনে পেলে তারা ভুলে যায় পুষ্টিকর খাবারের বিষয়টি। সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থতা বজায় রাখার জন্য পুষ্টিকর খাবার অপরিহার্য। শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা উচিত।


এই পোস্টে, আমরা প্রতিদিনের পুষ্টিকর খাবারের একটি তালিকা প্রদান করব যা আপনাকে সর্বোত্তম স্বাস্থ্য অর্জনের সহায়তা করবে। চলুন দেখে নেয়া যাক কি কি খাবার দৈনিক খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত এবং কেন ?

আপেল

প্রতিদিন যদি আপনি একটি আপেল খান তবে অনেক রোগ প্রতিরোধ করতে পারবেন। প্রচুর পরিমাণ পানি হয়েছে আপেলে। প্রতিদিন অন্তত একটি করে আপেল খেলে দূরে থাকবে অনেক রোগ। আপেলের উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ আমাদেরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আপেল খেলে অগ্নাশয় ক্যান্সারের সম্ভাবনা প্রায় ২৩% হারে কমে।

প্রকৃতপক্ষে আপেল ফলটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুনে ভরপুর যা আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং বিভিন্ন রোগের হাতে রক্ষা পেতে সাহায্য করে।

কলা

আপেলের মতোই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন একটি খাবার হল কলা যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ভিটামিন ও মিনারেলস রয়েছে। প্রতিদিন একটি আপেল খেতে না পারলে এর পরিবর্তে ১ থেকে ২ টি কলা খাওয়া যেতে পারে।

বাদাম

বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সহ স্বাস্থ্যকর চর্বি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। বাদাম শরীরকে পুরোপুরি সুস্থ রাখে। বাদাম খারাপ কোলেস্টেরলের একটি দুর্দান্ত অস্ত্র। বাদামের মাধ্যমে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করা যায়।

ডিম

দৈনিক বৃদ্ধি, হাড় শক্ত করতে ও মেধার বিকাশে ডিম খুবই কার্যকর। ডিমে আরও আছে ভিটামিন এ যা দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। আর কুসুমে থাকা ভিটামিন ডি,হাড় এর জন্য ভালো। ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, কোলিন ও ৮ ধরনের অ্যামাইনো এসিড থাকে যা সুস্থ দেহে গঠনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দুধ

দুধের পুষ্টি  উপকারিতা মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী একটি খাদ্য। দুধে প্রচুর পুষ্টি ও ভিটামিন থাকে। যা সুস্থ শরীরে জীবন যাপন করতে সাহায্য করে। দুধে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা দেহের ইমিউন সিস্টেম অন্যতম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। দুধ হচ্ছে ক্যালসিয়ামের সবচাইতে ভালো উৎস। আমাদের দাঁত ও হাড়ের গঠন মজবুত করে।

সকালে খালি পেটে কি খেলে শরীর ভালো থাকে

শরীর সুস্থ রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো খাবার। সঠিক সময়ে খাবার খেলে স্বাস্থ্যের অনেক উপকার হয়। খাবার ঠিকঠাক না পেলে শরীর পুষ্ট হয় না। কিছু খাবারের কথা বলা হয়েছে যেগুলো খালি পেটে খেলে স্বাস্থ্যের জন্য সঠিক উপকার পাওয়া যায়। চলুন জেনে নেয়া যাক, এমন কোন জিনিস রয়েছে যা খালি পেটে খাওয়া উচিত।

গরম পানিতে মধু

প্রতিদিন সকালে উঠে হালকা গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেলে পাকিস্থলের কর্ম ক্ষমতা বাড়ে।মধুর মধ্যে শরীরের প্রয়োজনীয় খনিজ, ভিটামিন, উৎসেচক থাকে যা শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে। মধুতে আছে প্রাকৃতিক চিনি যা শরীরকে শক্তি যোগায় এবং শরীরকে কর্মক্ষম রাখে।

 ডিম

ডিমে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি থাকে। সকাল বেলা খালি পেটে ডিম খেলে চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। খালি পেটে ডিম খেলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ডিমে উপস্থিত অ্যালবুমিন নামে এক ধরনের প্রোটিন পেশির গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খালি পেটে ডিম খেলে চুল পড়া কমে কারন অনেক সময় প্রোটিনের অভাবে চুল পড়ে যায়। ডিম শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি দূর করে।

আমলকির জুস

আমলকি একপ্রকার ভেষজ ফল। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা অন্যান্য ফলের তুলনা অনেক বেশি। আমলকির রস দিয়ে আপনার দিন শুরু করলে তা শরীরকে ডি টক্সিফাই করার সামগ্রিক উপায় অবদান রাখতে পারে। আমলকির জুস শরীরের বিপাক এবং ক্ষুধার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। খালি পেটে আমলকির জুস পান করলে তা শরীরের বিপাক ক্রিয়া বাড়িয়ে দেয়।


নিয়মিত আমলকির জুস পানে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ থাকে হজম ভালো হয় কোলেস্টেরল ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমে। হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে ও সাহায্য করে আমলকি রস। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। নিয়মিত আমলকি রস খেলে আপনার কোলেস্টেরলের মাত্র নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

এর পাশাপাশি ভালো থাকবে আপনার হৃদযন্ত্র। স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাবে। ত্বকেরও খেয়াল রাখে আমলকির রস। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনের সাহায্য করে। ত্বকের মধ্যে থাকা এই উপকরণ উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

খেজুর

খেজুর অত্যন্ত সুস্বাদু ও বেশ পরিচিত একটি ফল। খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে অন্তত দুইটি খেজুর যদি খাওয়া যায় তবে ধারে কাছে ভিড়বে না অনেক রোগ। খেজুর ভিজিয়ে রাখলে তাতে উপস্থিত ট্যানিন বা ফাইটিক এসিড দূর হয় যা এর পুষ্টিগুণকে সহজে শোষণ করে। ভিজিয়ে রাখলে এই ফল সহজে হজম হয়।

সকালে উঠে খালি পেটে খেজুর খান এতে সারাদিন সতেজ অনুভব করবেন খেজুর দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখতে কাজ করবে। খেজুরের সবচেয়ে বড় গুন হলো এই ফলটি মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে। আমাদের ক্লান্ত শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ শক্তির যোগান দিতে সক্ষম ইচ্ছে এই পুষ্টিগুণে ভরপুর সুস্বাদু ফলটি।

 ভেজানো বাদাম

রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে আমন্ড ভিজিয়ে খান অনেকেই বিশেষজ্ঞদের মতে, বাদাম ভিজিয়ে খেলে নানা অসুখ-বিসুখের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সারারাত বাদাম ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে বাদাম খেতে বলেন পুষ্টিবিদরাও। হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ভেজানো আমান্ড। প্রয়োজনীয় এনজাইম নিঃসরণে সাহায্য করে।

ভেজানো আমন্ডে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস শরীরের ফোলা ভাব কমায় ও অকালপক্কতা নিয়ন্ত্রণ করে। রোজ সকালে খালি পেটে ভেজানো আমন্ড খেলে শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে রোজ বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপের মত দীর্ঘস্থায়ী রোগগুলো থেকে দূরে থাকা যায়।

বাদাম খেলে শুধুমাত্র হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় না বরং মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সন্তান সম্ভাবাদের নিয়ম করে ভেজানো আমন্ড খেতে পরামর্শ দেন একটি স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা। এতে উপস্থিত ফলিক অ্যাসিড জন্মের সময় শিশুর খুত দূর করে।

সুস্থ থাকার ৫০ টি টিপস 

সুস্থ রাখার খাবার তালিকা সকল কাজের পূর্ব শর্ত হলো আপনাকে সুস্থ থাকতে হবে। আপনি যদি সুস্থ থাকেন তাহলে সকল কাজে উৎসাহ পাবেন এবং কাজকে উপভোগ করতে পারবেন। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে সুস্থ থাকা যায়। তেমনই ৫০ টি স্বাস্থ্য টিপস নিচে দেওয়া হল-
  • প্রতিদিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে দুই অথবা তিন কিলোমিটার হাটুন। এতে মন এবং প্রাণ সতেজ থাকবে।
  • এবার খাবার গ্রহণ করার আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পর অবশ্যই হাত ধুয়ে নিন।
  • যখনই খাবার খাবেন তখন ভালোভাবে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন। এতে পাচন ক্রিয়া ঠিক হবে।
  • মোটা হওয়ার প্রধান কারণ হলো তৈলাক্ত ও মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া। তা এ ধরনের খাবার কম খান।
  • বেশিরভাগ টাইমে হেঁটেই কাজ সারুন ।এতে পায়ের মাংসপেশিয়ে ব্যায়াম হবে।
  • সকলে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পান শরীরের জন্য খুব উপকারী।
  • ফাস্টফুড খেতে সকলেই ভালোবাসেন। কিন্তু এই খাবারগুলি শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই ফাস্টফুড ও বাহিরের খাবার খাওয়া এড়িয়ে যান।
  • নেশা করা শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। মদ্যপান ও ধূমপান ফুসফুস ও লিভারের রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই সুস্থ থাকতে নেশা থেকে দূরে থাকুন।
  • চা ও কফি কম পান করলে শরীর সুস্থ থাকে। অনেকেই অভ্যাসগত চা ও কফি পান করে থাকেন। কিন্তু সুস্থ থাকতে হলে এদের পরিমাণ নির্দিষ্ট রাখুন। বেশি পান করলে শরীরের ক্ষতি হয়।
  • মাথা ব্যথা হলে প্রচুর মাছখান। মাছের তেল মাথা ব্যথা প্রতিরোধে দারুন কার্যকর। খেতে পারেন আদা। প্রদাহ এবং ব্যথা নিরাময় তা বিশেষভাবে কার্যকর।
  • ঘরে তৈরি খাবার খান। শরীর ভালো রাখতে ঘরে তৈরি বিভিন্ন সালাত বা স্বাস্থ্যকর খাবারের কোন বিকল্প নেই।
  • হাঁপানিতে পেঁয়াজ খান। শ্বাসনালী সংকোচন রোধে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। পেটের পিরায় খেতে পারেন কলা ও আদা। আদা মর্নিং সিকনেস এবং বমি বমি ভাব দূর করে।
  • মধু নানা গুণের অধিকারী। গলা ব্যথা, মানসিক চাপ, রক্তস্বল্পতা, মাইগ্রেনসহ নানা স্বাভাবিক সমস্যার মধ্যে বিশেষভাবে কার্যকর।
  • গরমের দিন রাতে শোয়ার আগে গোসল করুন এতে ঘুম ভালো হবে। রাতে ঢিলঢালা পোশাক পড়ুন। শরীরের প্রত্যেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ রোম ছিদ্র দিয়ে শোষণ প্রক্রিয়া চালায়। সে কারণে শোয়ার আগে ঢিলেঢালা পোশাক পড়ে ঘুমানো উচিত।
  • যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সকালের নাস্তা সেরে ফেলুন। গবেষণায় দেখা গেছে যে সকালের নাস্তা শরীরের বিপাকীয় কাজে সাহায্য করে। তাই আপনি ঘুম থেকে ওঠার এক ঘন্টার মধ্যে আপনার নাস্তাটি সেরে নিন।
  • ক্যালরিযুক্ত খাবার অল্প খেলেই আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া তবে শরীরের প্রয়োজনে কমপক্ষে ৩৫০ ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত
  • সকাল বেলা কখনই এমন ধরনের খাবার খাবেন না যেগুলো পেটে গ্যাস তৈরি করে। বরং পুষ্টিকর কিছু খাবার খান যা আস্তে আস্তে হজম হয় এবং সারাদিন আপনাকে কর্মক্ষম রাখে।
  • বিকাল ৫টারপর ভারী খাবার খাবেন না। বিশেষ করে দুপুরের খাবার।
  • পানি সকালে বেশি পান করুন, রাতে তুলনামূলক কম।
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে ওষুধ খাবেন না।
  • ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়বেন না।
  • সর্বদা বাম কানে ফোন রিসিভ করুন। ফোনের ব্যাটারি যখন এক দাগ তখন ফোন রিসিভ না করাই ভালো, কারণ তখন ফোনের রেডিয়েশন বেশি থাকে।
  • কাঠবাদাম খান। চকলেটের মতো কাঠবাদামে আছে প্রচুর কপার যা মেলানিনের পরিমাণ ঠিক রাখে। এছাড়াও আছে প্রচুর ভিটামিন ই যা সুন্দর ত্বক চুলের জন্য খুবই জরুরী।
  • বিরতি নিয়ে কাজ করুন। তাড়া যতই থাকুক প্রতি এক ঘণ্টা কাজ করার পর এক দুই মিনিট চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেওয়া উচিত। এতে মস্তিষ্ক পরিষ্কার হয় এবং সচল থাকে।
  • সারাদিন শুয়ে বসে অযথা থাকবেন না, আবার দিনভর পরিশ্রমও নয়। কাজের ফাঁকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।
  • ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত মাছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন আছে যা আপনার হাড়, চু্‌ল, ত্বক সবকিছুর জন্য জরুরী। এছাড়াও সামুদ্রিক মাছ শরীরে পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
  • এসিডিটি বা বুক জ্বালা হলেও অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাবার খেতে হবে। তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া ও বেশি মসলাযুক্ত খাবার কম খান। একসঙ্গে বেশি খাবার না খেলে উপকার পাওয়া যায়। খাওয়ার সময় পানি কম খান। দুই খাবারের মধ্যবর্তী সময় বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।
  • খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। পরিমিত পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ই সমৃদ্ধ ফল এবং শাকসবজি নিয়মিত গ্রহণ করুন। চর্বি ও তৈলযুক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন, এটা আপনার ত্বকে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে।
  • খাওয়ার অরুচি ও ক্ষুধা মন্দা হলে ১-৩ গ্রাম আদা খোসা ছাড়িয়ে মিহি করে কুচিয়ে নিন। এবং তার সঙ্গে লবণ এবং কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে প্রতিদিন একবার করে ৭-৮ দিন খান
  • টিনজাত খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন। টিন জাত নানা খাবার ও ফ্রোজেন ফুড আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে ঠিকই কিন্তু এটি আমাদের দেহকে ধীরে ধীরে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর মুখে।
  • ফল জাতীয় খাবার না ধুয়ে খাবেন না। রাস্তায় খোলা জায়গায় বিক্রি হওয়া আখের রস, লেবুর রস খাবেন না।
  • ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে কখনোই ঘুমের ওষুধ খাবেন না।
  • চা বা কফি পানের পরিবর্তে গ্রিন টি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলুন গ্রিন টি এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের সুরক্ষায় কাজ করে।
  • ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে কোন খাবার বন্ধ করবেন না। খাবার স্যালাইন খান। এর সঙ্গে তরল খাবার বেশি করে খান।
  • গাজর ক্যারোটিন সমৃদ্ধ সবজি। শিশুর ৬মাস বয়স থেকে গাজরের রস দিতে পারলে ভালো হয়। এতে ত্বক চুল ও চোখ ভালো থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণ, চোখ ও ত্বকের সংক্রমণে গাজর খুবই উপকারী।
  • যারা হাঁপানি বা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তারা স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।
  • সারাদিন যখনই সময় পাবেন তখনই বড় বড় নিশ্বাস নিন এবং ছাড়ুন। এতে করে আপনার দেহে দ্রুত বেশি পরিমাণে অক্সিজেন প্রবেশ করবে এবং নিঃশ্বাস ছাড়ার মাধ্যমে দেহকে টক্সিন মুক্ত করতে সহায়তা করবে।
  • দিনের বেলা ঘুম এড়িয়ে চলুন। রাত ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
  • বিভিন্ন লবণ জাতীয় খাবার টিনজাত খাবার, লবণাক্ত বাদাম, আচার, অতিরিক্ত ঝাল খাবার ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো। কারণ এই গুলো খেলে সারাদিন তৃষ্ণা অনুভব করবেন।
  • শরীরে তাপমাত্রা যখন নিচে নেমে যায় তখন ভাইরাস আক্রমণ করে তাই আপনার শরীর উষ্ণ রাখুন।
  • আপনার পা ভেজা রাখবেন না। পা ভিজলে তা শুকনো নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। ডেটল পানিতে মিশিয়ে হাত-পা পরিষ্কার করুন যাতে আপনার হাতে পায়ে চুলকানি লাল লাল ফুসকুড়ি বা ত্বকের নানা সংক্রমণ যাতে রোগ এড়ানো যায়।
  • সাধারণ সর্দি কাশি বা জ্বর হলে নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না।
  • দেশী হোক বা বিদেশী, খাদ্য তালিকায় রাখুন প্রতিদিন বেরি জাতীয় ফল। এই দুইটি উপাদানই স্বাস্থ্যকর ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত জরুরী। এরা কোলাজেনের উৎপাদন বাড়ায় এতে বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ধির করে তথা আপনার যৌবন ধরে রাখতে সহায়তা করে।
  • জন্মের পরপরই আপনার শিশুকে মধু, চিনির পানি, মিশ্রির পানি বা পানি খেতে দিবেন না। জন্মের প্রথম তিনদিন শিশুকে গোসল করাবেন না।
  • সুস্থ থাকতে এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে আপনার খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন অল্প পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের বাদাম রাখতে পারেন। যেমনঃ চিনা বাদাম, কাজুবাদাম, ইত্যাদি.
  • যারা ফলমূল এবং শাক সবজি বেশি বেশি খায় তাদের হাঁপানি সহ বিভিন্ন এলার্জিজনিত রোগের ঝুঁকি অত্যন্ত কম থাকে।
  • ভালো ঘুম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও মানসিক সুস্থতা বাড়ায়।
  • সব সময় সোজা হয়ে বসুন। দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে থাকবেন না। চেয়ার ছেড়ে ১০ মিনিট হেঁটে আসুন।
  • নিজের সব কাজ নিজেই করার চেষ্টা করুন
  • ব্যস্ত থাকাটা শরীর ও মন দুয়ের পক্ষেই ভালো। তাই কাজে যতটা সম্ভব ব্যস্ত থাকুন।

লেখকের মন্তব্য

শরীর সুস্থ রাখার খাবার তালিকা সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আপনাকেও বিষয়গুলা জানাতে পেরে আমরা সত্যিই অনেক আনন্দিত।আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করছি। আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Umme Haney'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url