গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খাওয়া যাবে কি
প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আপনাকে আমার ওয়েবসাইটে স্বাগতম। গর্ভকালীন সময়ে
সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া আবশ্যক। কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে শারীরিক ব্যাপক
পরিবর্তন হওয়ায় কিছু খাবারের প্রতিবিধি নিষেধ থাকে। আজকের এই আর্টিকেলে
গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খাওয়া যাবে কি এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।
একজন সুস্থ মা কেবলমাত্র একটি সুস্থ সন্তান জন্মদান করতে পারে। গর্ভাবস্থায় ইলিশ
মাছ খাওয়া যাবে কিনা সে সম্বন্ধে জানা অত্যাবশ্যকীয়। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় একজন নারীর জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় খাবার দাবারের বিষয়ে
সচেতন থাকা উচিত। অনাগত সন্তানের ও মায়ের ভবিষ্যৎ সুস্থতা নির্ভর করে গর্ভকালীন
খাবারের উপর। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের মাছ খাওয়া উচিত জরুরী। গর্ভকালীন
সময়ে গর্ভবতী মায়ের প্রোটিনের চাহিদা বেড়ে যায়। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে
জানতে পারবেন
গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খাওয়া যাবে কি, গর্ভাবস্থায় চিংড়ি মাছ খাওয়া যাবে কি,
গর্ভাবস্থায় পাঙ্গাস মাছ খাওয়া যাবে, গর্ভাবস্থায় তেলাপিয়া মাছ খাওয়া যাবে
কি, গর্ভাবস্থায় শিং মাছ খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় সামুদ্রিক মাছ খাওয়া
যাবে কি এই সকল বিষয় আপনারা বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না
করে শুরু করি।
গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খাওয়া যাবে কি
হ্যাঁ গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খাওয়া যায়। ইলিশ মাছের থাকে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস
যা গর্ভজাত নারীর জন্য খুবই উপকারী এবং স্বাস্থ্যকর। এ ছাড়া ইলিশ মাছ গর্ভজাত
শিশুর শরীরে পাওয়ার বুষ্ট হিসেবে কাজ করে। যা শিশুর মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।
ইলিশ মাছে মার্কারি থাকার কারণে একটু সতর্কতার সাথে খেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ এশার নামাজ কয় রাকাত - এশার নামাজের নিয়ম
প্রতিদিন খাওয়া যাবে না, এতে শিশুর ক্ষতি হতে পারে। খেলেও সপ্তাহে দুই দিন খেতে
পারবে এতে কোন সমস্যা হবে না। গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খেলে গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক
ও চোখের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কম ওজন নিয়ে শিশু জন্মগ্রহণ করার ঝুঁকি
হ্রাস পায়। গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খেলে শিশুর মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডের গঠনগত
ত্রুটি হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
গর্ভাবস্থায় চিংড়ি মাছ খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় চিংড়ি মাছ খাওয়া যাবে কারণ এটি নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যের জন্য
বিভিন্ন উপকারিতা বয়ে আনে। গর্ভবতী নারীদের জন্য প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন
পর্যন্ত মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে সামুদ্রিক কম পরিমাণে
(সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুই দিন) খাওয়া উচিত। তবে চিংড়িতে খুব নগণ্য পরিমাণে
মার্কারি থাকে
যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। হাভার্ড
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো সামান্য ক্ষতি এরাতে গিয়ে চিংড়ির
পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হওয়া যাবে না। চিংড়ি মাছ খেলে অনেকের
ক্ষেত্রে এলার্জি দেখা দেয়। যাদের ক্ষেত্রে চিংড়িতে এলার্জি হয় তাদের চিংড়ি
খাওয়া যাবে না।
গর্ভাবস্থায় পাঙ্গাস মাছ খাওয়া যাবে
পাঙ্গাস মাছ প্রায় সর্বদা কারখানা চাষ করা হয়, যার ফলে পাঙ্গাস মাছ বিষ হয়ে
যায়। এছাড়া ফার্মে পাঙ্গাস মাছের স্বাদ বাড়ানোর জন্য রাসায়নিক সার ও বিষাক্ত
কীটনাশক দেওয়া হয় যা খেলে উপকারের থেকে অপকার বেশি হতে পারে। এবং বিভিন্ন ধরনের
ক্ষতি হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় পাঙ্গাস মাছ না খাওয়াই ভালো।
গর্ভাবস্থায় তেলাপিয়া মাছ খাওয়া যাবে কি
তেলাপিয়া মাছের প্রচুর পরিমাণ ক্ষতিকারক ফ্যাট থাকে, যা শরীরের কোলেস্টেরলের
মাত্রা বাড়ায় ও হার্টের রোগ অন্যান্য নানা রোগের কারণ হতে পারে। তাই
গর্ভাবস্থায় তেলাপিয়া মাছ খাওয়া উচিত নয়। গর্ভাবস্থায় মাছ খাওয়া ভালো তবে
কিছু মাছের উচ্চমাত্রায় পারদ থাকে। পারদ যুক্ত মাছ যখন নিয়মিত খাওয়া হয়, তখন
পদার্থটি রক্ত প্রবাহে জমা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আরো পড়ুনঃ কুয়েতের ১ টাকা বাংলাদেশের কত টাকা
জমা পারদ শিশুর স্নায়ুতন্ত্র এবং মস্তিষ্কের বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে।
উচ্চমাত্রায় পারদ যুক্ত মাছ এড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় তেলাপিয়া
মাছ খাওয়া যাবেনা কারণ তেলাপিয়া মাছের মার্কারের পরিমাণ বেশি থাকায় গর্ভবতী
মায়ের স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি করে। তাই আশা করা যায় গর্ভাবস্থায় তেলাপিয়া মাছ
খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
গর্ভাবস্থায় শিং মাছ খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিনের খাবার তালিকায় আমিষ জাতীয় খাদ্য অবশ্যই রাখুন। আমিষের অন্যতম প্রধান
উৎস হলো মাছ। গর্ভাবস্থায় শিং মাছ খেলে শরীরের রক্তস্বল্পতা কমে ও মায়ের বুকের
দুধ বৃদ্ধি করে সাহায্য করে। শিং মাছ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং
শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে। শিং মাছের উপকারিতা অনেক। তাই গর্ভাবস্থায় শিং মাছ
খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় সামুদ্রিক মাছ খাওয়া যাবে কি
শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের খুবই ভালো উৎস সামুদ্রিক
মাছ। একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য সামুদ্রিক মাছ খুবই উপকারী। সামাজিক মাছ গর্ভবতী
মহিলার স্বাস্থ্য ভালো রাখে। সাধারণত সামুদ্রিক মাছে মার্কারি থাকতে পারে বলে
ধারণা করা হয়। আর তাই সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে গর্ভবতী নারীদের জন্য সামাজিক মাছ
খুব বেশি পরিমাণে না খাওয়ায় উত্তম।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আশা করি গর্ভাবস্থায় ইলিশ মাছ খাওয়া যাবে কি এই সম্পর্কে আপনার
বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে
থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। এরকম আরো নতুন নতুন
টিপস পেতে আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। ''ধন্যবাদ''
Umme Haney'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url