সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজকের এই আর্টিকেলে সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। আপনি যদি স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে থাকেন এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চান, তবে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কারণ, আজ আপনাদের সাথে এমন কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব যা আপনি আগে জানতেন না। তাই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে কাজুবাদামের সকল উপকারী দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করতে পারবেন।
ভূমিকাঃ
কাজুবাদাম প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন সহ পুষ্টি উপাদানের সমৃদ্ধ একটি উপকারী বীজ। কাজু বাদামে এত পরিমাণে প্রোটিন যা প্রায় রান্না করা মাংসে পাওয়া প্রোটিনের সমান। কাজু বাদামে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার। এছাড়াও রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কাজুবাদামে ভিটামিনের অধিক পরিমাণের কারণে ডাক্তাররা একে ''প্রাকৃতিক ভিটামিন ট্যাবলেট'' বলে উল্লেখ করে থাকেন।
আরও পড়ুনঃ লো প্রেসারে কি খাওয়া উচিত
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা এই পোস্টটি পড়লে আপনি আরো জানতে পারবেন প্রতিদিন কয়টা কাজু বাদাম খাওয়া উচিত, কাজু বাদাম ও কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম, কাজুবাদামের অপকারিতা, কাঠ বাদামের উপকারিতা, কাজু বাদামের ক্ষতিকর দিক এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত হবে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
আমাদের শরীরে পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য কাজু বাদামের কোন বিকল্প নেই। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে কাজু বাদামের ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষার্থীদের মেধা শক্তি বৃদ্ধিতে এবং বয়স্কদের স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য চিকিৎসকরা কাজুবাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কাজুবাদামের ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কের টিস্যুর শক্তি বাড়িয়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। কাজুবাদাম কে আমরা ব্রেনের পাওয়ার বুস্টার বলে থাকি।
সুস্বাদু কাজুবাদাম প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনসহ পুষ্টি উপাদানের সমৃদ্ধ একটি বীজ। এত সব পুষ্টি উপাদানের কারণে এটির স্বাস্থ্যের উপকারিতা অনেক। খালি পেটে সঠিক খাবার সারাদিনের হজম ক্রিয়া ঠিক রাখে। চলুন জেনে নেই সকালে খালি পেটে কাজুবাদাম খাওয়ার কিছু আশ্চর্যজনক উপকারিতা সম্পর্কে-
হাড় মজবুত করেঃ রাতে দুধের সঙ্গে ভিজিয়ে রাখবেন কাজুবাদাম। সারারাত দুধে ভিজিয়ে রাখা কাজুবাদাম সকালে খেলে বার্ধক্যে হাড়ের ক্ষয় নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কাজু এবং দুধ দুটোতেই রয়েছে ভিটামিন কে, মিনারেল, ভিটামিন বি-৬, যা হাড়ের ক্ষয় রোধ করে পেশির ব্যথা, যন্ত্রণা উপশম করে। তাই কাজুবাদাম হাড়ের জন্য উপকারী হিসেবে কাজ করে।
কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করতে সাহায্য করেঃ সকালে খালি পেটে কাজু বাদাম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কাজু বাদামে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজমে সহায়তা করার সাথে সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যে দূর করতে সাহায্য করে। ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেটকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
নিয়মিত মলত্যাগ করতে না পারলে প্রতিদিন সকালে দুধের সাথে কাজুবাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যাবে এবং পেট থাকবে সুস্থ। পেট ঠিক থাকলে পুরো শরীর সুস্থ থাকবে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করেঃ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী হিসেবে কাজ করে কাজুবাদাম। এতে থাকা ফাইবার রক্তের শর্করা স্পাইক প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং এদের শর্করার পরিমাণও অনেক কম থাকে। আর এ কারণে এটি রক্তের শর্করার মাত্রা কমিয়ে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস ও কিছু অনিয়ম আমাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ফাইবার সমৃদ্ধ কাজুবাদাম ওজন নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বাদাম খাওয়ার পর খিদে কমে যায়। ফলে মাত্রা অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। সেইসঙ্গে শরীরের প্রয়োজন অতিরিক্ত ক্যালরি জমে ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা ও কমে।
হার্টের জন্য উপকারীঃ কাজুবাদাম স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকে কমাতে উপকারী। এছাড়াও একটি গবেষণা দেখা গেছে যে নিয়মিত কাজু বাদাম খাওয়া রক্তচাপ ট্রাইগ্লিসারাইড এর মাত্রা কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেঃ কাজু বাদামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এন্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এবং ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করতে কাজুবাদাম নিয়মিত খেতে হবে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ কাজুবাদাম কে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাওয়ার হাউস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কাজুবাদাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ একটি বীজ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখের বিভিন্ন রোগ, হৃদরোগ ও স্মৃতিশক্তি জনিত যে কোন সমস্যা প্রতিরোধ সহায়তা করে। তাছাড়া অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর ফলে ত্বকের সৌন্দর্যতা বজায় থাকে। চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
অ্যানিমিয়ার মত রোগের প্রকোপ কমেঃ কাজু বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন, যা শরীরে লোহিত রক্তকণিকার উৎপাদন এত পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যা তা দেহের রক্তস্বল্পতার মত সমস্যা দূর করে দেয়। সেই সাথে তা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাই অ্যানিমিয়ার মত রোগের প্রকোপ কমাতে এই কাজুবাদাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
প্রতিদিন কয়টা কাজু বাদাম খাওয়া উচিত
স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বাদামের জুড়ি নেই। বাদাম মস্তিষ্কের জন্য ভালো। শিশুদের মস্তিষ্ক গঠনেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কাজুবাদাম। বাদাম শরীরের বাজে কোলেস্টেরল কমায়, হৃদরোগ প্রতিরোধ করে, রক্ত সঞ্চালন সহজ করে। গবেষণায় বলা হয়, প্রতিদিন ১০ গ্রাম বাদাম খাওয়া বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।
১০ গ্রাম কাজু বাদাম মানে ৬ টি কাজুবাদাম। অর্থাৎ প্রতিদিন ৬টি করে কাজু বাদাম খাওয়া উচিত। গবেষণায় বলা হয়, প্রতিদিন ১০ গ্রাম বাদাম খেলে আয়ু বাড়ে। সুস্বাস্থ্যের জন্য অনেকেই খাদ্য তালিকায় কাজুবাদাম রাখে। স্বাস্থ্যকর সব খাবারের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এই কাজুবাদাম নিয়মিত খেলে শরীরের নানা রকম সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়।
কাজু বাদাম ও কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম
কাজুবাদামের রয়েছে ফাইবার, ম্যাঙ্গানিজ, ফসফরাস, জিংক, কপারের মতো কিছু উপকারী উপাদান। কাজুবাদাম বহু উপকারী গুণাগুণ সম্পন্ন। কাজু বাদাম খেলে বিভিন্ন প্রকার রোগ বলাই থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। অন্যদিকে কাঠবাদামও বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কাঠবাদাম শরীরের জন্য বেশ উপকারী। নিয়মিত কাঠবাদাম খেলে আপনি অনেক ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
কাজুবাদাম খাওয়ার নিয়ম
কাজুবাদাম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। কাজুবাদাম এ প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। প্রতিদিন কাজুবাদাম খেলে শরীরের বিভিন্ন উপকার হয়। তবে কাজু বাদাম খেয়ে যদি আপনি উপকৃত হতে চান তাহলে অবশ্যই কাজুবাদাম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। চলুন জেনে নিন কাজুবাদাম খাওয়া সঠিক নিয়ম গুলো সম্পর্কে।
সরাসরি খাওয়া যায়ঃ চাইলে আপনি সরাসরি কাজুবাদাম খেতে পারেন। পরিষ্কার করে সরাসরি কাজুবাদাম খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আপনি প্রাকৃতিকভাবে আপনার স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে চান সে ক্ষেত্রে নিয়মিত কাজ বাদাম খেতে পারেন।
শিশু বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কাজুবাদাম খাওয়ার নিয়মঃ ১-৩ বছরের বাচ্চাদের গলার নালি চিকন হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে তাদের খুব সাবধানতার সাথে খাওয়াতে হবে। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য খাবারের সাথে এই কাজু বাদাম মিশিয়ে খাওয়ালে বেশি ভালো হয়। সপ্তাহে ১০/১২ টা
সালাতের সাথে মিশ্রিত করেঃ সালাতের সাথে কাজুবাদাম মিশ্রিত করলে সালাদের পুষ্টিগুণ বেড়ে যায় এবং সালাত আরো বেশি সুস্বাদু হয়। তাই সালাদের স্বাদ এবং গুণগত মান বৃদ্ধি করার জন্য সালাতের সাথে কাজুবাদাম মিশ্রিত করা যেতে পারে।
গর্ভবতী মহিলাদের খাওয়ার নিয়মঃ গর্ভবতী মহিলাদের জন্য প্রতিদিন ১০-৫০ গ্রাম কাজুবাদাম খাওয়া ভালো যা ৩৫-৬৫ টি বাদামের সমতুল্য। যদি বেশি খাওয়া হয়ে যায় তাহলে আপনার সপ্তাহে মাত্র ২-৩ বার করে খাওয়া উচিত। এক্ষেত্রে আপনি আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে বাদাম খাওয়ার নিয়ম তৈরি করে নিতে পারেন।
কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়ম
কাঠবাদামে থাকা পুষ্টিগুণ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য কে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এই বাদামে থাকে মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনে দুটি পুষ্টিগুণ রিবোফ্লাভিন ও এল ক্যারিনিটিন। কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আমরা সবাই জানি না কিন্তু আমরা ঠিকই কাঠবাদাম খেয়ে থাকি। তাহলে চলুন কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নিন।
পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঠবাদাম খাওয়াঃ দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঠবাদাম খাওয়া উচিত। সাধারণত ১০-১৫ টি কাট বাদাম দিনের সাধারণ খাদ্যমত গ্রহণ করুন।
ভিজিয়ে রেখে কাঠবাদাম খাওয়াঃ কাঠবাদাম রাতে পরিষ্কার পানিতে এক থেকে দুইবার ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে। তারপর সকালে সেই ভেজানো কাঠবাদমের পানি সহ কাঠ বাদাম খালি পেটে খেতে হবে। তাহলে কাঠ বাদামের সমস্ত পুষ্টিগুণ খুব ভালোভাবে পাওয়া যাবে।
কাজু বাদামের অপকারিতা
অনেক ভালো গুনে উন্নত হওয়ার পাশাপাশি কাজু বাদামের কয়েকটি খারাপ দিকও রয়েছে। কোন ব্যক্তির যদি এলার্জির সমস্যা থেকে থাকে তাহলে সে ব্যক্তির কাজুবাদাম হতে দূরে থাকায় অনেক ভালো। আপনার কাজুবাদাম পছন্দ আর আপনি রোজ প্রয়োজনের থেকে বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে গ্যাস্টিকের সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ পেটের ফাটা দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
অতিরিক্ত কাজুবাদাম খাওয়ার ফলে ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কাজুবাদামের ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই অতিরিক্ত কাজুবাদাম খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। কাজু বাদামও রয়েছে উচ্চ অক্সালেট। বেশি পরিমাণ অক্সালেট আমাদের শরীরে প্রবেশ করলে কিডনিতে পাথর জমতে পারে।
যাদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে, সেই সকল ব্যক্তির কাজুবাদাম থেকে দূরে থাকা উচিত। ভাজা বা লবণ যুক্ত কাজু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সর্বোত্তম সুবিধার জন্য, কাঁচা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। নিয়মিত এবং পরিমিত পরিমাণ কাজ বাদাম খেলে শরীরের কোন ক্ষতি হয় না। নিয়মিত কাজুবাদাম দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
কাঠ বাদাম এর উপকারিতা
কাঠবাদাম হল একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ ও বহুমুখী উপাদান। সুস্থ আহার প্রণালীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাঠ বাদাম অনেক জনপ্রিয় হচ্ছে। কাঠবাদাম একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য যা অনেক উপকারিতা রাখে। কাঠবাদামের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। তাহলে কাঠবাদামের উপকারিতা সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক।
মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিঃ
কাঠবাদামে থাকা পুষ্টিগুলো আমাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে বেশ সাহায্য করে। কাঠবাদামে আছে মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় দুইটি পুষ্টিগুণ রিবোফ্লাভিন ও এল ক্যারিনিটিন। এই উপাদান দুইটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়াও কাঠবাদাম স্মৃতিভ্রম রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত
নিয়মিত ৪-৫ কাঠবাদাম ভিজিয়ে খেলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। এছাড়াও কাঠবাদাম আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপকারী ফ্যাট উৎস হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখে। অল্প বয়সী শিশুদের বিকাশের জন্য কাঠবাদাম অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার।
হজমে সাহায্য করেঃ
কাঠবাদাম ফাইবার সমৃদ্ধ। এই কারণে, তারা অন্ত্র পরিষ্কার পরিষ্কার করতে এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সহায়তা করে। ফলে খাওয়ার হজম হতে সুবিধা হয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কাঠবাদাম আপনার অন্ত্রে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ ঘটাতে সাহায্য করে এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি রোধ করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ
কাঠবাদাম স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার জন্য উপকারী। প্রোটিন, ফাইবার এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ এই খাবারটি আপনার খিদে সন্তুষ্ট করতে সক্ষম। বাদামে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, যা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত ক্ষুধা হ্রাস করার চাবিকাঠি।
হার্ট ভালো রাখেঃ
নিয়ম করে ভেজানো বাদাম খেলে আমাদের হার্ট ভালো থাকে। এর কারণ হলো কাঠবাদামে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, প্রভৃতি উপকারী উপাদান থাকে, যা হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন-ই হৃদরোগের ঝুকি কমায় এবং ম্যাগনেসিয়াম হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়ঃ
কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণ মনো-স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যা শরীরের জন্য উপকারী ফ্যাট হিসেবে পরিচিত। কাঠবাদামে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরী উপাদান শরীরের অভ্যন্তরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। যার কারণে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের আশঙ্কা কম থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ
কাঠবাদাম অ্যালকেলাইন সমৃদ্ধ একটি খাবার। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-ই। রয়েছে অনেক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে দেহকে সুরক্ষা দেয়।
হাড় ও দাঁত মজবুত করেঃ
কাঠ বাদামে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, ফসফরাস যা হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। কাঠবাদামে থাকা ফসফরাস দাঁত মজবুত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। চিকিৎসকের মতে, হাড় ও দাঁত মজবুত করতে যে সমস্ত পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন তা কাঠবাদামে বর্তমান। তাই হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় নিয়মিত কাঠ বাদাম খাওয়া খুবই স্বাস্থ্যকর।
কাজু বাদামের ক্ষতিকর দিক
প্রায় প্রতিটি খাবারের মধ্যে খারাপ দিক এবং ভালো দিক থাকে। কাজুবাদামে ক্যালরির পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে স্থূলতা, রক্তের শর্করার মাত্রা সমস্যা হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস ও থাইরয়েড রোগেদের কাজুবাদাম খাওয়া উচিত নয়। তবে পরিমাণ মতো কাজু বাদাম নিয়মিত খেলে কোন ক্ষতি হয় না।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করি উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনারা সকালে খালি পেটে কাজুবাদাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বেশ কিছু জানা অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। নিজেকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত কাজুবাদাম খাওয়ার অভ্যাস করুন। আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ।
Umme Haney'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url