বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভিসা করতে কত টাকা লাগে

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। আজকের আলোচ্য বিষয় বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভিসা করতে কত টাকা লাগে,ভারতীয় ভিসা পেতে কতদিন লাগে,ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কত টাকা লাগে,ভারতের ভিসা করতে কত টাকা লাগে ২০২৩,ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে,ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসা পেতে কতদিন লাগে এইসব বিষয়ে জানুন এই আর্টিকেল থেকে।
বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভিসা করতে কত টাকা লাগে
প্রিয় পাঠক আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকেন তাহলে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।

ভূমিকা

ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের জন্য ইন্ডিয়া যেন এক স্বপ্নের দেশ। আবার অনেকে রোগাক্রান্ত জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ইন্ডিয়াতে ভ্রমণ করে থাকে। আমাদের মধ্যে এমন অনেক বাংলাদেশী নাগরিকরা আছেন যারা তাদের বিয়ের শপিং, বিভিন্ন কসমেটিকস, কেনাকাটা কিংবা বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজের জন্যও ইন্ডিয়াতে গিয়ে থাকেন।

বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভিসা করতে কত টাকা লাগে

ভ্রমণ প্রেমীদের কাছে ভারত অন্যতম প্রিয় গন্তব্য। বাংলাদেশ বা অন্যান্য দেশ থেকে ইন্ডিয়া যেতে ভিসা বানাতে হবে। ভিসা বানানোর জন্য ভিসা এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। সেখানে তারা ইন্ডিয়ান ভিসা বানিয়ে দেবে। এজন্য আপনার অনেক টাকা খরচ হবে। এছাড়াও ভিসার দাম ওপর নির্ভর করে ভিসার ধরনের ওপর।

আমাদের বাংলাদেশ থেকে প্রত্যেক বছর হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন কাজে ইন্ডিয়া যাচ্ছে। ইন্ডিয়া যাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে ভিসার আবেদন করতে হবে। ভিসা ছাড়া কখনো ইন্ডিয়া বা নিজের দেশ থেকে অন্য কোন দেশে যেতে পারবেন না।


আজকের এই পোস্টে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভিসা করতে কত টাকা লাগে তা শেয়ার করা হয়েছে। ভারতের ভিসা করাটা অনেকে খুবই জটিল মনে করেন। বিষয়টা আসলে কিন্তু তা নয়, বরং নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করলে আপনি সহজে ভিসা পেয়ে যেতে পারেন। প্রতিদিন প্রায় ১৫,০০০ মানুষকে ভিসা দেয় ভারত।

ভিসা ছাড়া আপনারা কোন দেশে যেতে পারবেন না। তবে কিছু কিছু দেশে ভিসা ফ্রি করে দেওয়া হয়েছে। ভিসার পাশাপাশি একটি পাসপোর্ট বানাতে হবে ভিসার জন্য কত টাকা লাগে তা নির্ধারিত নয়। এর কারণ এক এক ভিসার জন্য এক এক রকমের খরচ হয়। এছাড়াও দেশের ওপর নির্ভর করে এর দাম। সাধারণত ইন্ডিয়ান ভিসা করতে ১ লাখ থেকে ২ লাখ। তবে এর চেয়ে অনেক কমেও বানানো যেতে পারে।

ভারতীয় ভিসা পেতে কতদিন লাগে

যারা ভারতে ভ্রমণ,ডাক্তার দেখানোর জন্য অথবা যেকোনো কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান। কিন্তু তারা অনেকেই জানেন না ভারতীয় ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে। এ বিষয়ে নিয়ে আজকের এই পোস্ট। তাহলে চলুন ভারতীয় ভিসা পেতে কত দিন সময় লাগে বিস্তারিতভাবে জেনে নেই।

ভারতীয় ভিসা পেতে আপনারা খুব বেশি দিন লাগে না। আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যদি সঠিক থাকে তাহলে কমপক্ষে ১ থেকে দেড় মাস সময় লাগতে পারে। কিন্তু কাগজপত্রের কোন সমস্যা থাকলে এর চেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে।

আপনি যখন ভারতীয় ভিসার জন্য অনলাইন আবেদন করবেন। এবং যখন আপনি ভারতের ভিসার ফ্রি পরিশোধ করবেন তার পরবর্তী ৫ দিন থেকে ৭ দিনের মধ্যে আপনার ইমেইল এড্রেসে ভারতীয় ভিসা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কত টাকা লাগে

ইন্ডিয়াতে বাংলাদেশিরা ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করেন। কারন বাংলাদেশ থেকে অল্প টাকায় ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ঘুরে আসা যায়। আপনারা যারা ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন। তারা চাইলে, ভারত ভ্রমণ করার জন্য ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে পারেন। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা চালু রয়েছে।

তাই আপনি যদি ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার খরচ সম্পর্কে একান্ত ভাবে জানতে চান? তাহলে আমাদের লেখা আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে পড়ার চেষ্টা করুন।


কোন দেশে ভ্রমণের জন্য যেতে চাইলে তাহলে টুরিস্ট ভিসা বানাতে হয়। তবে টুরিস্ট ভিসা অনেক কম খরচে বানানো সম্ভব।বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেতে প্রায় ৩ থেকে ৭ লাখ টাকার উপরে লাগে। কিন্তু ভারত ও বাংলাদেশ পাশাপাশি দেশ হওয়ায় এর ভিসা খরচ খুবই কম। মাত্র কয়েক হাজারের মধ্যেই ভারত বাংলাদেশে ভিসা বানাতে পারবেন।

সবমিলিয়ে ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার খরচ প্রায় ৫০০০ টাকা। তবে ভিসার খরচ এক হলেও আকাশ পথ ও স্থল পথের যাতায়াত খরচ ভিন্ন হবে। বাংলাদেশ থেকে যদি বিমান পথে ইন্ডিয়া যেতে চান তাহলে আপনার খরচ হতে পারে ১০ হাজার টাকার মত। আর যারা সড়কপথে বা রেলপথে যেতে চান তাদের খরচ হতে পারে ৪০০০-৫০০০ টাকার মত।

ভারতের ভিসা করতে কত টাকা লাগে ২০২৩

আজকের এই আর্টিকেলে ভারতের ভিসা করতে কত টাকা লাগে সেই সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করব। মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়ার চেষ্টা করুন।

ইন্ডিয়ান এম্প্লয়মেন্ট ভিসাঃ
  • ইন্ডিয়ান এম্প্লয়মেন্ট ভিসা ফি (ছয় মাস পর্যন্ত) – ৩৯, ১০০ টাকা
  • ইন্ডিয়ান এম্প্লয়মেন্ট ভিসা ফি (এক বছর পর্যন্ত) – ৪২, ৫০০ টাকা
  • ইন্ডিয়ান এম্প্লয়মেন্ট ভিসা ফি (এক বছরের বেশি)- ৫০,৭৪৫ টাকা
ইন্ডিয়ান এম্প্লয়মেন্ট ভিসা এপ্লিকেশন ফি বাবদ এক্সট্রা লেগে থাকে ১০০ ডলার থেলে ২০০ ডলার পর্যন্ত। আলাদা আলাদা কম্পানির এম্প্লয়মেন্ট ভিসা র ফি আলাদা হতে পারে।

 ইন্ডিয়ান বিজনেস ভিসাঃ
  • ইন্ডিয়ান বিজনেস ভিসা/ ৩০ দিন (একাধিক প্রবেশ) – ২, ১২৫ টাকা
  • ইন্ডিয়ান বিজনেস ভিসা/ ৯০ দিন (একক প্রবেশ) – ২, ২৯৫ টাকা
  • ইন্ডিয়ান বিজনেস ভিসা/ ৯০ দিন (একাধিক প্রবেশ) – ৩,৪০০ টাকা
  • ইন্ডিয়ান বিজনেস ভিসা/ ৬ মাস (মাল্টিপল এন্ট্রি) – ৬,৮০০ টাকা
  • ইন্ডিয়ান বিজনেস ভিসা/ ১ বছর (একাধিক প্রবেশ) – ৬, ৮০০ টাকা
  • ইন্ডিয়ান বিজনেস ভিসা/ ৫ বছর (মাল্টিপল এন্ট্রি) – ১০, ২০০ টাকা
 ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসাঃ
  • ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা/ ৩০ দিন (ডাবল এন্ট্রি) – ১, ২৭৫ টাকা
  • ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা / ৯০ দিন (একক প্রবেশ)- ১, ২৭৫ টাকা
  • ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা/ ৯০ দিন (ডাবল এন্ট্রি) – ২, ২৭৫ টাকা
  • ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা/ ৬ মাস (ডাবল/ মাল্টি পল এন্ট্রি) – ২, ১২৫ টাকা
ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসাঃ

ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসা প্রসেসিং ফি বাংলাদেশ এর নাগরিক দের জন্য ভিসা ফি নেওয়া হয় না। SBI ব্যাঙ্ক (স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া) দ্বারা মেডিকেল ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা (৭ – ৯ USD) খরচ হয় যা আমাদের IVAC-তে জমা দিতে হবে।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসা করতে কি কি লাগে এই সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আপনারা যারা বাংলাদেশ থেকে ইন্ডিয়া ঘুরতে যাবেন তাদের অবশ্যই ভিসা প্রয়োজন। সকল কাজের একটা নিয়ম থাকে। এই নিয়মের মধ্যে কাজ করতে হয়। তেমন ভিসা বা পাসপোর্ট এর জন্য কয়েকটি ধাপ রয়েছে,যা আপনাকে মেনে ভিসা বানাতে হবে।

ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো যা যা লাগবে তা নিচে তালিকা থেকে দেখে নিনঃ
  • ইন্ডিয়ান টুরিস্ট ভিসার জন্য প্রথমে পাসপোর্ট বানাতে হবে
  • আবেদন করার সময় একটি রঙিন ছবি ও আরেকটি স্ট্যাম্প সাইজের মোট দুই কপি ছবি লাগবে
  • স্মার্ট কার্ড, এনআইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি লাগবে। এগুলো না থাকলে জন্ম সনদের ফটোকপি জমা দিবেন।
  • আপনার কাজের বিষয় বা আপনি যে পেশায় যুক্ত আছেন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য লাগবে।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট ডলার অথবা ইন্টার্নেশনাল কার্ডের ফটোকপি প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ ব্যাংকের কিছু ডকুমেন্ট লাগবে।
  • পাসপোর্ট ও ডাটা পেজ এর ফটোকপি প্রয়োজন হবে এবং এর আগে যদি ইন্ডিয়া যেয়ে থাকেন সেই পূর্বের ভিসার ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • ইন্ডিয়ার আগের যেকোনো পাসপোর্ট থাকলে জমা দিতে হবে আর যদি সেই পুরাতন পাসপোর্ট হারিয়ে যায় তাহলে জিডি কপি নিতে হবে।

ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসা পেতে কতদিন লাগে

প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ মেডিকেল ভিসা ইন্ডিয়া যাচ্ছে। কারণ আমাদের দেশের তুলনায় ইন্ডিয়া চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেক বেশি উন্নত। এছাড়াও স্বল্প ফরজের মাধ্যমে ইন্ডিয়া থেকে অনেক রোগের চিকিৎসা করা যায়। আপনি যদি চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়া দিতে চান। এজন্য আপনাকে ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।

 
অনেকেই মনে করেন ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসা পেতে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয়। তবে এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। ইন্ডিয়ান মেডিকেল ভিসা পেতে খুব বেশি সময় লাগে না। আপনার সকল কাগজপত্র যদি সঠিক থাকে তাহলে সর্বোচ্চ ১৫ দিনের মধ্যে হাতে পেয়ে যাবেন। আবার কারো কারো ২০ দিন পার হয়ে যায় কিন্তু ভিসার কোন খবর থাকে না।

এদের মূল সমস্যা হলো কাগজপত্র সমস্যা রয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করার পর মেডিকেল ভিসার জন্য আবেদন করুন। ইনশাল্লাহ ১০ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই মেডিকেল ভিসা হাতে পেয়ে যাবেন।

শেষ কথা

আশা করি আজকের আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার পর ভারতীয় ভিসা সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। যা আপনার ভিসা প্রসেসিং এর সময় আপনাকে সাহায্য করবে। তো শেষ পর্যন্ত আমাদের লেখা আর্টিকেলটি পড়ে, আপনাদের কাছে কেমন লাগলো। আশা করি কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Umme Haney'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url