পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায় জেনে নিন

পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায় সম্পর্কে আজকের এই পোস্টে আপনাদের স্বাগতম। আপনার পেটে অতিরিক্ত চর্বি বলে আপনি কি সমস্যায় ভুগছেন? আপনি কি অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন? আপনি বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করেছেন তবু ও উপকার পাননি! আমাদের আজকের পোস্ট আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায়
অতিরিক্ত তৈলাক্ত বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে পেটের চর্বি বা মেদ বেড়ে যাওয়া সমস্যা হলে সাধারণ হয়ে উঠেছে। পেটের মেদ একটি বিব্রতকর বিষয়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক পেটের চর্বি কমানোর সহজ উপায় গুলো।

ভূমিকা

পেটের মেদ কমাতে মানুষের চিন্তার শেষ নেই। ভুল খাদ্যভাসের জন্য বেশিরভাগ মানুষেরই ওজন বেড়ে যায়। ওজন কমাতে হলে অবশ্যই আগে নিয়মিত হাটা প্রয়োজন। শুধু হাঁটলেই হবে না খাদ্যের তালিকার দিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। পেটের মেদ দ্রুত কমাতে সাহায্য করবে এমন ৯ টি সহজ উপায় নিয়ে এই লেখায় আলোচনা করা হয়েছে।

কি খেলে পেটের চর্বি কাটে

পেটের অতিরিক্ত চর্বি হচ্ছে রোগের বাসা। তাই সুস্থ থাকতে হলে অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে ফেলতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যভাস ও অনিয়মিত জীবন যাপনের হাত ধরে শরীরের জমে বাড়তি চর্বি। চর্বি কমানোর জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ডায়েট করে থাকি। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এসব করা ঠিক নয়। কারণ এতে চর্বিত কমবেই না, বরং বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ক্ষতি হবে।

আসুন জেনে নেই কি খেলে পেটের চর্বি কাটে

লেবু পানি
দেহের বিপাক বাড়াতে পানি সহায়তা করে। এর সঙ্গে লেবু যোগ করলে দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যোগায়। চীনের সাউথ ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় 'কলেজ অফ হর্টিকালচার এন্ড ল্যান্ডস্কোপ আর্কিটেকচার' এর করা গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিপাক প্রক্রিয়ার গোলমাল সরাতে সাহায্য করে, ফলে চর্বি পোড়ানোর পরিমাণ ও বাড়ে।

খেজুর
উচ্চ ক্যালরির ডায়েটে বিশেষ কাজে আসে খেজুর। এতে ক্যালরি খুব বেশি ও সহজে পেট ভরে বলে ক্ষুধা কম লাগে। কয়েকটা খেজুর অনেকক্ষণ খিদে কমিয়ে রাখতে পারে। তাই প্রতিদিন ৪-৫ টা খেজুর রাখুন পাতে। এতে ওজন কমবে।

কিশমিশ
স্বাদে মিষ্টি বলে অনেকেই ফ্যাট আসার ভয়ে এই খাবারকে সরিয়ে রাখেন। আসলে চর্বি কমাতে এর ভূমিকা অসীম। কিশমিশ খেলেই শরীরে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটতে শুরু করে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের হারকে কিছুটা কমায়। এছাড়া এতে গামা নামক শক্তিশালী নিউরোট্রান্সমিটার থাকায় তা খিদে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই কিশমিশ রাখুন ৩-৪ টি।

লাল আপেল
এই ফলে রয়েছে দ্রবণীয় আঁশ যা পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রের 'ওয়েট ফরেস্ট ব্যাপটিস্ট মেডিকেল সেন্টার' এর গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০ গ্রাম দ্রবণীয় আঁশ যারা গ্রহণ করে তাদের পাঁচ বছরের ৩.৭ শতাংশ চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

বাঁধাকপি
বাঁধাকপি যে আঁশে পরিপূর্ণ সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। পুষ্টিবিজ্ঞানের আরও তথ্য অনুসারে এই সবজি কোলেস্টেরলের মাত্র কমাতে পারে। খাওয়ার পর হজমের জন্য পিত্তথলি থেকে পাচক রস বের হয়। আর এই রসকে চর্বি গ্রহণে বাধা দিতে পারে বাঁধাকপি।

কাঁচা রসুন
রসুনের থাকা উপকারী যৌগ শরীরের মেদ কমাতে বিস্ময়কর কাজ করে। যে কারণে নিয়মিত কাঁচা রসুন খেলে আপনি একটি ঝরঝরে মেদ দিন শরীর পেতে পারেন। রসুন হলো এক ধরনের প্রাকৃতিক শক্তির বুস্টার যা সেই একগুয়ে ক্যালরি গুলোকে ঝরাতে সাহায্য করে, ফলে আপনার জন্য ফিট থাকা সহজ হয়।


সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানির সঙ্গে রসুনের কোয়াটি গিলে ফেলুন। আপনি চাইলে পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। কাঁচা রসুন ওজন এবং পেটের চর্বি কমানোর একটি হাতিয়ার বেশ কার্যকরী। তাই পেটের মেদ কমাতে চাইলে কাঁচা রসুন বেছে নিন এবং আপনার ওজন কমানোর যাত্রা মসৃণ করুন।

তল পেটের মেদ কমানোর উপায়

পেটের ওপরের দিকের মেদ কমে গেলেও তলপেটের মেদ কমতে চায় না অনেকের। আর এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম তলপেটের মেদ কমাতে অনেকটাই সাহায্য করে। জেনে নিন তলপেটের মেদ কম করার সেই সব সহজ ব্যায়াম, যা অভ্যাস করতে সময় কম লাগে, আলাদা করে কোন উপকরণেরও প্রয়োজন পড়ে না।

১। তলপেটের মেদ ঝরাতে প্রথমে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকুন। দুই পা একসঙ্গে উপরের দিকে তুলুন। কিছুক্ষণ রাখুন এভাবে। হাটু যেন ভাজ না হয় একটুও। এরপর পা নামান। এভাবে বার দশেক করুন। প্রতি দিনে এর সংখ্যা বাড়ান। প্রতি সেট ১০ বার। চেষ্টা করুন ধীরে ধীরে তিন সেট করে অভ্যাস করতে। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন।

২। চিৎ হয়ে শোয়ার পর এবার এক এক করে দুই পা তুলুন। প্রতি পা তুলে কিছুক্ষণ রাখুন। সেই পা নামিয়ে আবার অপর পা তুলুন। এটিও বার দশেক করুন। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন।

৩। চিত হয়ে শুয়ে। সাইক্লিং করার মত করে পা ঘোরান। এতে তলপেটের সঙ্গে ভারী কোমরেরও সমস্যা মিটবে। এক্ষেত্র ও১০ বারে একটি সেট। দুই থেকে তিনটি সেট করার চেষ্টা করুন।

৪। চিত হয়ে শুয়ে পা দুইটি কে এক সঙ্গে তেচার করে (মোটামুটি ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে) রাখুন। কিছুক্ষণ এভাবে রাখুন। তারপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন পা।

৫। যে কোন ব্যায়াম প্রথম প্রথম অভ্যাস করতে গেলে পেশীতে টান পড়ে, ব্যথা হয়। খুব ব্যথা হলে সেই অবস্থায় ব্যায়াম করবেন না। অল্প ব্যথা হলে তাতে ব্যায়ামের নিয়মে কিছু হেরফের হয় না। সে ক্ষেত্রে সংখ্যায় কম করুন প্রথমে। ধীরে ধীরে সংখ্যা বাড়ান

মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর উপায়

বর্তমানে বেশিরভাগ মেয়েরা অতিরিক্ত চর্বির কারণে ভুগছেন। বর্তমানে আমাদের জীবন যাপন ও খাওয়াদাওয়ার কারণে এই মেদ বা পেটে চর্বি সমস্যা দিন দিন বাড়ছে প্রথমদিকে আমরা এই এই চর্বির সমস্যা কে অবহেলা করলে ভবিষ্যৎ এটা আমাদের জীবনের ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই সময় থাকতে মহিলাদের এই পেটের মেদ কমানো উচিত।

আজ আমরা জানবো মহিলাদের মেদ কমানোর উপায় সম্পর্কে। পেটের মেদের সমস্যা যেমন ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বাড়ায় তেমনি শরীরের চেহারাও রূপেও প্রভাব পড়ে। পেটে মেদ জমে গেলে মহিলারা সামান্য কাজকর্মে হাপিয়ে ওঠে। জাঙ্কফুড, খাওয়ার অনিয়ম, বাহির খাবার খাওয়ার ফলে মেদ বা চর্বি সমস্যা দেখা যায়।
 

আপনি যদি একজন মহিলা হন এবং আপনি যদি পেটে মেদের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। নিজে মহিলাদের পেটের মেদ কমানোর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পেটের মেদ কমানোর জন্য সুষম খাদ্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। । নিচে দেওয়া সুষম খাদ্য তালিকা আপনার পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করবে।

প্রোটিন-- আপনার খাদ্য তালিকা তে প্রোটিন যুক্ত খাবার যোগ করুন। যেমন চর্বিবিহীন মাছ, মাংস, ডিম এবং দুগ্ধ জাত প্রোটিন ইত্যাদি। প্রোটিন যেমন আপনাকে শক্তি যোগাবে তেমনি মেদ থেকে দূরে রাখবে।

ফাইবার-- প্রতিদিন আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ফাইবার রাখা উচিত। আপনার খাবার হজম করে মলকে নরম করে। নিয়মিত পেট পরিষ্কার থাকলে আপনার চর্বি হওয়ার ঝুঁকি কম হয়। তাই ফাইবার জাতীয় খাবার যেমন ফল, কলা, শাকসবজি, বাদাম,বিনস, গম খাওয়া মেদ কমাতে উপযোগী।

শাকসবজি-- বেশি পরিমাণে শাকসবজি আপনার খাবারে যোগ করুন। শাকসবজি খাওয়ার হজম করে মলের পরিমাণ বাড়ায়। শাকসবজি কম ক্যালরি ও কম ফ্যাট থাকায় মেদ কমাতে উপকারী।

কার্বোহাইড্রেট-- কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাওয়ারের পরিমাণ আপনাকে কমাতে হবে এর পরিবর্তে বেশি প্রোটিনযুক্ত খাবার খান। চাল, গমে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকায় তবে আপনি সাদা চাল, সাদা আটা ও ময়দার পরিবর্তে ব্রাউন চাল বা ঢেঁকিছাঁটা চাল, লাল আটা ওটস এর মত গোটা শস্য খেতে পারেন। সাদা চাল বা আটা প্রস্তুত করার সময় এর থেকে বেশি পরিমাণে ফাইবার বেরিয়ে যায়।

কিন্তু ফাইবার আমাদের খাবার হজমের সাহায্য করে তাই কম কার্বোহাইড্রেট ও বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।

প্রচুর পরিমাণে জল পান-- প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। জলে খাওয়ার হজম সাহায্য করে। প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ লিটার জল একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের খাওয়া উচিত। জল হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রেখে পেটে মেদ বা চর্বি কমাতে সাহায্য করে। সকালবেলা উঠে খালি পেটে এক গ্লাস জলে লেবু ও মধু মিশিয়ে খেলে পেটে মেদ কমে।

শর্করা বা মিষ্টি জাতীয় খাওয়ার বর্জন-- মিষ্টি জাতীয় খাওয়ার আমাদের মোটা হওয়ার জন্য দায়ী। অতিরিক্ত শর্করা বা ফ্যাট জাতীয় খাওয়ার খেলে আমাদের পেটে মেদ জমে। আমরা প্রতিনিয়ত যে সব খাওয়ার খেয়ে থাকি আমাদের শরীর প্রয়োজনের শর্করা সেইসব খাবার থেকে পেয়ে থাকে

তাই আলাদা করে আমাদের শরীরের শর্করা প্রয়োজন হয় না। শর্করা আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক তাই যেসব খাওয়ারে শর্করার পরিমাণ বেশি সেই সব খাবার কম খাওয়াই ভালো।

৭ দিনে পেটের মেদ কমানোর উপায়

সুস্থ, স্বাস্থ্যকর ও আকর্ষণের দেহ সবারই আকাঙ্ক্ষিত। কিন্তু আমাদের আধুনিক জীবন ব্যবস্থা অনিয়ত অভ্যাস ও অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং প্রায় শারীরিক কার্যক্রম শূন্য অবস্থায় পরিপূর্ণ। এর ফলে আমাদের মাঝে বেশিরভাগ মানুষেরই চর্বিযুক্ত দেহ এবং দীর্ঘস্থায়ী স্থুলতার সমস্যা থাকে। তবে অনেকেই এসব সমস্যার সমাধান চেষ্টা করেছে।


কিছু খাবার আছে যেগুলো শরীরের চর্বি কাটাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে পেটের মেদ কমাতে উপকারে এসব খাবার সম্পর্কে জানা থাকলে ওজন নিয়ন্ত্রণ সুবিধা হয়। তাই আসুন জেনে নিই পেটের মেদ কমানোর কয়েকটি সহজ উপায়।

ফল ও সবজি:
এ খাবারগুলোতে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ও ফাইবার বেশি থাকার কারণে তা কোলেস্টরেল ও পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। খাবারের আঁশ চর্বিকণাকে বেঁধে ফেলে এবং মল মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে। পাশাপাশি ফল ও শাকসবজিতে আঁশ জাতীয় উপাদান বেশি থাকার কারণে ক্ষুধাস অনুভূতি হ্রাস করে।

প্রতিদিন অন্তত চার পাঁচ ধরনের ফল ও শাকসবজি খেলে তা অন্যান্য খাবারের প্রতি আকর্ষণ কমায়। এ বিশেষ কয়েকটি কারণে পেটের মেদ কমাতে ফল ও সবজি কাজ করে।

সবুজ চা:
হালকা এই পানীয় কেবল শরীরকে সতেজি রাখে না, সঙ্গে ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সবুজ চায়ে এন্টিঅক্সিডেন্ট এর প্রাচুর্য পরোক্ষভাবে অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে।

বাদাম ও অলিভ অয়েল:
প্রতিদিনের খাবার তালিকায় প্রোটিন থাকা যেমন অত্যাবশক, ঠিক তেমনি জরুরী ফ্যাট জাতীয় খাবারের উপস্থিতি। আঁতকে উঠলেন? কিন্তু এটাই সত্যি। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, সব ফ্যাটিই শরীরের জন্য ক্ষতিকারক নয়। শরীরকে সব ধরনের খাদ্য উপাদানের সুষম বন্টনই সুস্থ থাকার নির্দেশ করে। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও মিনারেল এর মত দেহে ফ্যাটের ও প্রয়োজন।

বিশেষ করে কিছু ভিটামিন শোষণের জন্য প্রয়োজন ফ্যাট। এ, ডি, কে এবং ই ভিটামিনের অভাব দেখা দিতে পারে, যদি শরীর তার প্রয়োজন মত ফ্যাটের সরবরাহ থেকে বঞ্চিত হয়। তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখুন কাঠবাদাম, চিনাবাদাম ,কুমড়ার বিচি ,শিমের বিচি, কিডনি বিন ও জলপাইয়ের তেল। বাদাম ও দানা জাতীয় খাবার থেকে

যে ফ্যাট পাওয়া যায় তাকে পুষ্টিবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় 'মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট'। এই ফ্যাট রক্ত থেকে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ত্বকও অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দেখভাল করে, চামড়ার মসৃণতা বাড়াতে সাহায্য করে পাশাপাশি মেটাবলিক রেট বাড়ায়, যা ওজনরা হ্রাস ভূমিকা রাখে।

সামুদ্রিক মাছ:
সামুদ্রিক মাছ থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড। এই এসিড মেদ বৃদ্ধিতে দায়ী চর্বিকে পোড়াতে এবং শরীরে ভালো চর্বির পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। সামুদ্রিক মাস থেকে যে ফ্যাট পাওয়া যায় তার নাম 'পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট'। বাদাম ও জলপাই তেলের মত সামুদ্রিক মাছের ফ্যাট ওজন হ্রাসে ভূমিকা রাখে।

মসলা:
রান্না যেসব মসলা ব্যবহার করা হয়, যেমন রসুন, হলুদ, দারুচিনি, আদা এগুলো বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মসলার নিজস্ব গুণাগুণের কারণে তার শরীরকে আয়ুর্বেদিক কিছু উপকারিতা দিয়ে থাকে। আবার মসলা খাবারকে সহজপাচ্য করে, যা খাবারকে সুস্বাদু করার সঙ্গে সঙ্গে হজমেও সাহায্য করে। আদা, দারুচিনি ও হলুদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পরোক্ষভাবে ওজন কমাতে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

পানি:
শরীর থেকে বর্জ্য বের করে দিতে পানির ভূমিকা অসাধারণ। বলা হয়, প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি ওজন হ্রাসে সরাসরি ভূমিকা রাখে। পানি শরীরকে সতেজ রাখে, অযথা ক্ষুদাভাবকে দূর করে। বারবার পানি পান করার ফলে শরীর চাঙ্গাবোধ করে। মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়। তাই ওজন কমানোর অন্যতম আরেকটি জরুরী পদক্ষেপ পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া।

আঁশজাতীয় খাবার:
এই ধরনের খাবার রক্তে ইনসুলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, যার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আঁশজাতীয় খাবারে ভিটামিন বি বেশি থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পাশাপাশি আমাদের বেসাল মেটাবলিক রেট (বিএমআর)সচল রাখার মাধ্যমে শরীরকে তার খাবার পরিপূর্ণভাবে সদ্ব্যবহার করতে সাহায্য করে। শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমা রাখার প্রবণতা কমাতে আঁশ জাতীয় খাবারের জুড়ে মেলা ভার।

পুরো শরীরের মেদ কমানোর উপায়

দুশ্চিন্তা আমাদের শরীরের যেসব ক্ষতি করে তার মধ্যে একটি হলো এটি আমাদের ওজনও বাড়িয়ে তোলে। ওজন কমিয়ে একটা ছিপছিপে পাতলা, মেদহীন শরীর পাওয়ার জন্য আমরা কত কি না করি! কিন্তু শত রকম ডায়েট চার্ট অনুসরণ করার পরও পেটের মেদ যেন কমতেই চায় না। তখন মনে হয় এর চাইতে বড় চ্যালেঞ্জ এ জগতে আর কিছু নেই!

কিন্তু তার জন্য হাল ছেড়ে দেওয়ার মানে হয় না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু নিয়ম মেনে চললে আপনি পেতে পারেন আপনার কাঙ্খিত স্বাস্থ্য আজ পাঠকের জন্য থাকছে তেমনই কিছু টিপস।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করা
তলপেটের মেদ কমানো সবচেয়ে দ্রুততম উপায় হলো উচ্চমাত্রর প্রোটিন ও ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে রক্তে সুগারেরমাত্র নিয়ন্ত্রণ রাখা। এসব খাদ্যের মধ্যে রয়েছে ঘাস খাওয়ানো হয় এমন গরুর মাংস, স্যালমন মাছ, মাখন এবং অলিভ অয়েল ইত্যাদি। কারণ প্রোটিন ও ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবারের দিকে যদি আপনার মনোযোগ বেশি থাকে

তাহলে মিষ্টি জাতীয় খাবারের দিকে আকর্ষণ কমে যাবে এবং রাতে সুগারের মাত্রা স্থিতিশীল রাখবে। তবে নিজের দেহকে খাদ্য বিপাক প্রক্রিয়ার জন্যও সময় দিতে হবে এবং দুই খাবার মধ্যবর্তী সময়ে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে ফ্যাট ঝরাতে হবে।

প্রচুর পানি পান করা
সুস্থসবল ভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের শরীরে প্রয়োজন প্রচুর পানি। কিন্তু আপনি জেনে হয়তো অবাক হবেন, পানি আমাদের ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও সাহায্য করে। স্বাস্থ্য বিষয়ক কোচ ভার্জিনিয়া গ্রুলার বলেন,'' পানি আমাদের ক্ষুধা ভাব নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরকে শক্তি দেয়। মেটাবলিজম ও হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি সাধন করে।''

নিজেকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখা
দুশ্চিন্তা আমাদের শরীরে যেসব ক্ষতি করে তার মধ্যে একটি হলো আমাদের ওজন বাড়িয়ে তোলে।গ্রুলারের মতে, দীর্ঘমেয়াদি দুশ্চিন্তাগ্রস্ততার ফলে কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যায় যা ইনসুলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে এবং রক্তের সুগারের ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। উচ্চমাত্রায় দুশ্চিন্তা গ্রস্ত থাকলে চিনি জাতীয় ও ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। 

তাই বই পড়া, হাঁটাহাঁটি, জার্নালিং কিংবা শরীরচর্চার অথবা বন্ধুদের সাথে কথা বলার মাধ্যমে নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে।

শুধু পেট নয়, পুরো শরীরের দিকেই মনোযোগ দেওয়া
শরীরের শুধুমাত্র একটি অংশের মেদ কমানোর দিকে মনোযোগ না দিয়ে পুরো শরীরের প্রতিই মনোযোগ দিতে হবে।শরীরের ফ্যাট কমে গেলে আস্তে আস্তে পেটের মেদ কমতে থাকবে। ওজন অনুশীলনের মতো ব্যায়ামের মাধ্যমে নিজের মেটাবলিজম বাড়িয়ে তুলতে হব। এটি পেশিকে সচল করে যা ক্যালরি ঝরাতে সাহায্য করে এবং আপনাকে শক্তিশালী রাখে।

ওজন পরিমাপ করা
একটি নির্দিষ্ট সময় বিরতির পর পর নিজের ওজন পরিমাপ করুক। জ্যাকসনের ভাষায়, ''গবেষণা বলে, প্রতি সপ্তাহে আপনার শরীরে মোট ওজনের -৫ দশমিক ১ শতাংশ ওজন কমা উচিত। এর চেয়ে বেশি ওজন কমে গেলে বুঝতে হবে আপনার বেশি ক্ষয় হচ্ছে এবং ডায়েট প্রক্রিয়া নষ্ট হচ্ছে। তাই ধৈর্য ধরে নিয়ম গুলো অনুসরণ করতে হবে এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।

চিনি খাওয়া বন্ধ
আমরা সবাই জানি চিনি আমাদের শরীরের জন্য ভালো উপাদান নয়, কিন্তু এটা আমাদের তলপেটের মেদ কমাতে পারে। আমাদের তলপেটে দুই ধরনের ফ্যাট থাকে, অভ্যন্তরীণ ফ্যাট এবং ত্বক নিম্নস্থ ফ্যাট। এই দুটি ফ্যাট কমানোর জন্যই বাড়তি চিনি ও অ্যালকোহল গ্রহণ বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ বাড়তি চিনি খেলে আমাদের শরীর সুগারের মাত্রা কমানোর জন্য ইনসুলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই সুগার যখন যকৃতে গিয়ে গ্লাইকোজেনে রূপান্তরিত হয় যা অবশেষে ফ্যাট হিসেবে জমা হয়।

নিয়মিত ব্যায়াম
বাংলায় একটি প্রবাদ আছে-' কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না।' মেদভুঁড়ি কিংবা ওজন কমানোর যাত্রাও ঠিক তেমনিই। পেটের মেদ কমাতে চাইলে পেটের ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়েছেন একাধিক স্বাস্থ্যবিদ। ব্যায়াম করলে ত্বক নিম্নস্থ চর্বি কমে যায়, অন্যদিকে ডায়েটের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চর্বি কমতে থাকে।

ঘুম জরুরী
রাতে ভালো ঘুম শরীর মনকে ভালো রাখে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে বলে জানিয়েছেন রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ান ক্যাথেরিন জনস্টোন। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে পেটে মেদ জমতে পারে। দৈনিক ৭-৯ ঘন্টা না ঘুমালে দিনের বেলা উচ্চ ক্যালরি সম্পন্ন খাবার খাওয়ার ইচ্ছে বেড়ে যায়, বিশেষত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যা দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করতে সক্ষম।

তাছাড়া দীর্ঘদিন যাবত ঘুম কম হতে থাকলে কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই ঘুমের রুটিন ঠিক করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এ কাজে আপনি চাইলে ফিটনেস ট্র্যাকারের সাহায্য নিতে পারেন।

হাঁটাহাঁটি করা
শরীরের বাড়তি ক্যালরি ঝরানোর জন্য হাটাহাটি করা যে একটা উৎকৃষ্ট ব্যায়াম। তা কে না জানে! তাছাড়া হাঁটলে দুশ্চিন্তা কমে। যাদের সারাদিন টেবিল চেয়ারে বসে কাজ করতে হয়, তাদের পেটে সহজে মেদ জমে যায়। ভুঁড়ি গোল হতে শুরু করে। তাই তাদের উচিত ৩০-৪০ মিনিট বসে কাজ করার পর উঠে ১০-১৫ মিনিট হাঁটাহাঁটা করা।

লেখকের মন্তব্য

পেটের চর্বি কমানোর ৯টি সহজ উপায় পোষ্টের মাধ্যমে আমরা শিখতে পেরেছি। নিয়মিত ব্যায়াম করুন আর মহান আল্লাহ তালার উপর ভরসা রাখুন তবে আপনার সব রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আপনার জন্য দোয়া করি, আপনারা ভালো থাকবেন আর আপনারাও আমার জন্য দোয়া করবেন। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। ''ধন্যবাদ''

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Umme Haney'র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url